রাজধানীর বিজয় সরণিতে নবনির্মিত ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সকাল ১০টায় এ ভাস্কর্য উদ্বোধন করেন তিনি।
শৈশবের স্মৃতিচারণ করে এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছোটবেলায় শিশুরা তোমরা বাবা মায়ের হাত ধরে স্কুলে যাও, আমাদের সেই সৌভাগ্য হয়নি। বাবার সঙ্গে দেখা হতো কারাগারে। মাসে দুইবার জেলগেটে যেতে পারতাম। স্কুল থেকে জেলগেটে গিয়েছি, কলেজ থেকে জেলগেটে গিয়েছি। এই ছিল আমাদের জীবন।
তিনি বলেন, তবে আমাদের কোনো ক্ষোভ ছিল না, আমরা জানি আমাদের বাবা সংগ্রাম করছেন দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। স্বাধীনতার পর থেকে তিনি সে প্রচেষ্টাই চালিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা ধরে রেখেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
সরকারপ্রধান বলেন, সারাদেশে ওয়াইফাই সুবিধা, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটসহ আধুনিক সব প্রযুক্তি স্থাপনা করে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপ দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়েছে দেশের মানুষ। বর্তমানে দেশের ৯৮ ভাগ শিশু স্কুলে যেতে পারছে। বিনা পয়সায় বই পাচ্ছে, বৃত্তি পাচ্ছে। উপবৃত্তির টাকা দরিদ্র মায়েদের মোবাইলে পৌঁছে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, শিক্ষাই সবচেয়ে বড় সম্পদ। শিক্ষার মধ্য দিয়ে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে শিশুরা দেশকে আরও উন্নত-সমৃদ্ধ করবে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালি জাতি যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছে। বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছি। এ বাংলাদেশ একসময় আজকের বাংলাদেশ ছিল না। এমনকি ১৫ বছর আগের বাংলাদেশেও এখনকার বাংলাদেশ নয়। ক্ষুধা, দারিদ্র্য, শিক্ষার অভাব, চিকিৎসাহীনতা, গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের ক্রন্দনে বাংলার আকাশ-বাতাস ভারী ছিল। এই বাঙালি জাতিকে আত্মসম্মানে মুক্তি দেওয়ার জন্যই জাতির পিতার সংগ্রাম। জাতির পিতা নিজের জীবনটা উৎসর্গ করেছিল এ দেশের মানুষের জন্য।
মৃত্যুঞ্জয়ী ভাস্কর্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ভাস্কর্যের মাধ্যমে দেশের ইতিহাস আরও ভালোভাবে জানা যাবে।