বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশ তালা মারেনি, তারা নিজেরাই তালা মেরে রেখেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে অবরোধে নাশকতায় আহতদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বিএনপি কার্যালয়ে তারা নিজেরা তালা মেরে রেখেছে এবং তারা এখন সেখানে আসে না। কেন আসে না সেটা তারাই ভালো বলতে পারবে। আমাদের পুলিশ সেখানে সবসময়ই থাকে নিরাপত্তার জন্য। মাসের ৩০ দিনই সেখানে পুলিশ প্রহরায় থাকে, একইভাবে এখনও সেখানে পুলিশ আছে।
তারা যদি এখানে আসে, অফিস খুলে কার্যক্রম চালায় আমাদের কোনো আপত্তি নেই বা কখনোই ছিল না, যোগ করেন তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, অবরোধ কর্মসূচিতে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। নাঈম নামে একজন পরিহন শ্রমিককে ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। আহতরা অনেকে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। এখানে যেসব পরিবহন শ্রমিক চিকিৎসাধীন তাদেরকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার চিন্তা করেছি, আমরা তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি।
আর যারা নাশকতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সব প্রক্রিয়া চলমান। এরই মধ্যে আগুন দেওয়ার সময় আমরা হাতেনাতে ১৩ জনকে গ্রেফদার করেছি, এছাড়া, অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা এসব কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা যেখানেই লুকিয়ে থাকুক কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে হাবিবুর রহমান বলেন, অবরোধ এবং পরবর্তীতে পুলিশ দিন রাত রাস্তায় থেকে কাজ করে যাচ্ছে। মালিক-শ্রমিকরা আমাদের সঙ্গে রয়েছে। পুলিশ যথাযথ ভাবে কাজ করছে। এরপরেও যে হামলাগুলো হচ্ছে এগুলো একান্তই চোরাগোপ্তা হামলা। শ্রমিকরা ঘুমন্ত থাকা অবস্থায় বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। এসবের জন্য পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে।
আমরা বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছি, জনগণের সহায়তায় আমরা অনেককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। সবারই এগিয়ে আসা উচিত, তাহলে চোরাগোপ্তা নাশকতা প্রতিরোধ করতে পারবো।
খিলক্ষেত এলাকায় পুলিশ সদস্যকে ছুরিকাঘাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত না। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে, এরপর বলা যাবে কেন হামলা হয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এরই মধ্যে আমরা বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছি, যেসব স্থান থেকে বাসে যাত্রী উঠে এবং নামে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশসহ ড্রাইভার-হেলপাররা যাত্রীদের ছবি তুলে রাখছেন। এছাড়া, বিভিন্ন চেকপোস্টে বাস থামিয়ে বাসের ভেতরে চেক করা হচ্ছে। গাড়ি যেন যত্রতত্র ফেলে না রাখে, ড্রাইভারদের আরও সচেতন হতে বলা হয়েছে। হামলা প্রতিরোধে আমাদের পুলিশের সব ইউনিট কাজ করছে।
সামনে তফসিল ঘিরে পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা দেখেছি এর মধ্যে অনেক আন্দোলন-হরতালের নামে সহিংসতা করা হয়েছে। যে ধরনের সমস্যাই আসুক এসব মোকাবিলা করার সক্ষমতা পুলিশের রয়েছে।