আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে শর্তহীন সংলাপের আহ্বান জানিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র পাঠানো চিঠির জবাব দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এতে বর্তমান বাস্তবতায় অর্থপূর্ণ সংলাপ সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পক্ষে চিঠির জবাব নিয়ে যান দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ও সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত। এ সময় মার্কিন দূতাবাসের অ্যাকটিং ডেপুটি চিফ অব মিশন আর্টুরো হাইন্সের কাছে চিঠি হস্তান্তর করেন তিনি।
গত ১৩ নভেম্বর ডোনাল্ড লুর লেখা চিঠিটি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে হস্তান্তর করেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। এর আগে একইরকম চিঠি বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতাদের কাছেও হস্তান্তর করেন পিটার হাস। কয়েক দফা বাংলাদেশ সফর করে যাওয়া ডোনাল্ড লুর এই চিঠিতে দেশের প্রধান তিনটি দলকে শর্তহীন সংলাপে বসার আহ্বান জানানো হয়। বিএনপি আগেই চিঠির জবাব দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। ২০২৪ সালে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হয়েছে। যেখানে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। আওয়ামী লীগ কয়েক মাস ধরে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নিঃশর্ত সংলাপের জন্য দরজা খোলা রেখেছিল। বিএনপি এই জাতীয় সংলাপের পূর্বশর্ত হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের ওপর অনড় থাকায় সংলাপ হয়নি।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বর্তমানে বিএনপি ও জামায়াতের মতো তাদের সমমনা মিত্ররা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে অবরোধ এবং এই ধরনের অবরোধ কার্যকর করার উপায় হিসেবে অগ্নিসংযোগের মতো জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত অবরোধ সমর্থকরা মোট ১৫৪টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে।
এতে বলা হয়, এভাবে চলমান অবরোধ এবং এ ধরনের কর্মসূচির প্রধান দাবির মধ্যেও যদি আওয়ামী লীগ বিএনপি ও অন্যদের সঙ্গে বসতে পারে, তবুও কোনো অর্থবহ সংলাপ হবে না। আগামী সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের নির্বাচনী কাজ চূড়ান্ত করতে সমস্ত সময় ব্যয় করতে হবে। ৩০০টি আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের পর্যালোচনা এবং চূড়ান্ত করা, তাদের ইশতেহার তৈরি করা, প্রচারণার কৌশল চূড়ান্ত করা, ভোটারদের কাছে প্রচারণার কাজ রয়েছে। যদি সব শর্ত একটি সংলাপের জন্য অনুকূল হয়, তবে বাস্তবের সঙ্গে অর্থপূর্ণ সংলাপ করার জন্য যথেষ্ট সময় হাতে নেই।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগ সব আন্তর্জাতিক বন্ধুদের সঙ্গে অংশীদারিকে গুরুত্ব দেয় এবং আশা করে যে, তারা একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণের সামনে উপস্থাপনের জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।