দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ায় নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে পদত্যাগ করেছেন টেকনোক্র্যাট কোটার ৩ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩ জন উপদেষ্টা। তাদের পদত্যাগপত্র কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে টেকনোক্র্যাট দুই মন্ত্রী, একজন প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপদেষ্টা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। পদত্যাগপত্র দেয়ার পর তা কার্যকর করার জন্য একটা পদ্ধতি আছে। সেই প্রক্রিয়া আমরা শুরু করেছি। প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই তা কার্যকর হবে।
পদত্যাগ করা টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী-উপমন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। ৩ উপদেষ্টার মধ্যে রয়েছেন- অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী।
তবে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এবং বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান পদত্যাগ করছেন না।
এর আগে রোববার বেশিরভাগ গণমাধ্যমে খবর আসে সংসদ সদস্য ব্যতিত অন্যান্য উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তা স্পষ্ট করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয়ের নিয়োগ প্রধানমন্ত্রীর কার্যলয় থেকে দেওয়া হয়েছে। তার নিয়োগ পুরোটাই অবৈতনিক। উনি তো কোনো সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে যাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া করা হয়েছে, তাদেরটা এখান থেকে হচ্ছে। যাদেরকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন, তারা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সময়ে মন্ত্রিসভা ছোট হবে কি না এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি মো. মাহবুব হোসেন।
সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে কিছু বলা নেই। ২০১৮ সালের নভেম্বরে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের দিন টেকনোক্র্যাট চার মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলা হলে তারা পদত্যাগ করেন। সেসময় বাকি মন্ত্রীরা সবাই রুটিন কাজ করে গেছেন।
এর আগে ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সর্বদলীয় নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরোনো কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে নতুন করে ছয়জনকে যুক্ত করা হয়েছিলো।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচনকালীন সরকার পরিচালিত হয়েছে, এবারও একই ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার।