ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান ওলিও বলেছেন, মদ হচ্ছে একটা মেডিসিন। এটা মেডিসিন হিসাবে খায়। এটি একটি হালাল ব্যবসা। হালাল না হলে সরকারই বেহালাল হয়া যায়।
গতকাল সোমবার রাতে ফেসবুক লাইভে এসে এ মন্তব্য করেছেন তিনি।
একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লাইভের মন্তব্যের ঘরে তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি সংসদ সদস্য হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মদের বার খুলবেন কি?’
জবাবে ফিরোজুর রহমান ওলিও বলেন, ‘এমপিরাই এখন মদের লাইসেন্স দিচ্ছে। এ দেশে বিখ্যাত মদের কারখানা বানায়ে রাখছে। আগে তো রেলস্টেশনে মদের দোকান ছিল। তুমি যদি আবদার করো তাইলে দেব। তবে তোমরা এ মদ খাইতে পারবা না। সেই শক্তি তোমাদের হইছে না। মদ হচ্ছে একটা মেডিসিন। ভালো কথা বলো।
তিনি বলেন, এটা মেডিসিন হিসাবে খায়। তোমার যদি ইয়ে থাকে, ডাক্তার বললে ব্যবস্থা করে দেব। আমরা তো ঘুষ খাই না। আমরা তো মানুষের মনে আঘাত দেই না। আমরা শুনি, ঘুষের টাকা কোথায় ধরা খাইছে। সরকারকে জিগাইবা কেন দেয়। তোমাদের সরকারই দিতাছে।
ওলিও বলেন, আমার ম্যানেজাররা চুরি কইরা লক্ষ কোটি টাকা নিয়ে নিজেরা কয়েকটা দিছে। আমার ব্যবসা, পবিত্র ব্যবসা। আমি হালাল ব্যবসা করি। হালাল না হলে সরকার ব্যবসা করে কেন। হালাল না হলে সরকারই বেহালাল হয়া যায়। আমি ব্যাংকের ব্যবসা করি। মদের ব্যবসার জন্য যদি ১০টা বেত মারে। তাহলে ব্যাংকের ব্যবসার জন্য একশটা বেত মারবে। ইসলাম কী কইছে না কইছে সরকার বুঝবে। ভালো কথা বলো।
প্রসঙ্গত, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ফিরোজুর রহমানের রাজধানী ঢাকায় হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনাল, অ্যারাম, পিকক এবং গোল্ডেন ড্রাগন নামের বারসহ বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ২০২১ সালের (২৮ সেপ্টেম্বর) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানাধীন নবাব হাবীবুল্লাহ রোডের হোটেল পিকক লিমিটেডের চতুর্থতলা ভবনে অভিযান চালানো হয়। সন্ধ্যা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে পাঁচ হাজার ৪৫৫ বোতল বেশি-বিদেশি অবৈধ মদ ও বিয়ার জব্দ করা হয় এবং ৪ জন কর্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়।
২৯ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, অভিযানে হোটেল পিকক লিমিটেড বারের কর্মচারীদের বসবাসের চতুর্থ তলার খাটের নিচে বিশেষ কৌশলে বানানো বক্সে, চতুর্থ তলায় অবৈধভাবে বানানো সুড়ঙ্গ রুম ও ভবনের নিচে বাইরের পূর্বপাশে কয়লা রাখার রুমে বানানো সুড়ঙ্গে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মদ ও বিয়ার অবৈধভাবে মজুত করা হতো।
র্যাবের আভিযানিক টিম ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, সহকারী পরিচালক ও পরিদর্শকসহ তাদের আভিযানিক টিম যৌথ অভিযান পরিচালনা করলে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর র্যাবকে নিশ্চিত করে, ওই বারের তৃতীয় তলায় শুধু তাদের অনুমোদিত গোডাউন রয়েছে। তবে অন্যান্য গোডাউন অবৈধ।
এরপর চতুর্থ তলার সুড়ঙ্গ, খাটের নিচে ও ভবনের নিচে বাইরের পূর্বপাশে কয়লা রাখার রুমে বিশেষভাবে তৈরি সুড়ঙ্গ থেকে অবৈধভাবে মজুত করে রাখা কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দুই হাজার ৪৯৬ ক্যান বিদেশি বিয়ার, এক হাজার ৪১৬ ক্যান দেশি বিয়ার, ১১৫ বোতল বিদেশি মদ ও এক হাজার ৪২৮ বোতল দেশি মদ জব্দ করা হয়।