গত ২৪ দিনে (২৮ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর) সারাদেশে মোট ১৯৭টি যানবাহন ও স্থাপনায় আগুনের খবর পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এই সময়ে অগ্নিকাণ্ডে ১৮৫টি যানবাহন ও ১৫টি স্থাপনা পুড়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায়। দেশের ৩৪টি জেলায় আগুনের ঘটনা ঘটে। বাকি ৩০ জেলায় অগ্নিকাণ্ডের খবর ফায়ার সার্ভিস পায়নি। আজ মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর।
প্রতিষ্ঠানটির পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দেশে ৬০টি উপজেলায় অগ্নিকাণ্ডের তথ্য পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। বাকি ৪৩৫টি উপজেলায় কোনো আগুনের সংবাদ পায়নি। জেলাভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গাজীপুরে সবচেয়ে বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা সিটি করপোরেশনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় আগুনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৬০টি, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩৫টি আগুনের ঘটনা ঘটে। এলাকাভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মিরপুরে এলাকায় সবচেয়ে আগুনের ঘটনা বেশি। মিরপুর এলাকায় ১৭টি, গুলিস্তানে ৯টি, নয়াপল্টন-কাকরাইল এলাকায় ৭টি, খিলগাঁও-মুগদা এলাকায় ৭টি, পোস্তাগোলা-যাত্রাবাড়ী এলাকায় ৭টি, মতিঝিল-আরামবাগ এলাকায় ৫টি, মোহাম্মদপুরে ৪টি, বারিধারা ৪টি করে আগুনের ঘটনা ঘটেছে।
জেলাভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গাজীপুরে ১৬টি, চট্টগ্রামে ১৪টি, বগুড়ায় ১৩টি, নারায়ণগঞ্জে ৬টি, মানিকগঞ্জে ৪টি, ফরিদপুরে ৪টি, লালমনিরহাটে ৪টি, নাটোরে ৪টি করে আগুনের সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। উপজেলাভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বগুড়া সদর উপজেলায় আগুনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি। বগুড়া সদরে ৮টি, গাজীপুর সদরে ৬টি, নারায়ণগঞ্জ সদরে ৪টি, ফেনী সদরে ৩টি, কালিয়াকৈর উপজেলায় ৪টি করে আগুনের ঘটনা ঘটে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা সিটিতে ৯৫টি, ঢাকা বিভাগে ৩৭টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২২টি, রাজশাহী বিভাগে ২৪টি, বরিশাল বিভাগে ৭টি, রংপুর বিভাগে ৭টি, খুলনা বিভাগে ২টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ২টি, সিলেট বিভাগে ১টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুন দেওয়া যানবাহন ও স্থাপনার মধ্যে বাস ১১৮টি, ট্রাক ২৬টি, কাভার্ড ভ্যান ১৩টি, মোটরসাইকেল ৮টি, প্রাইভেটকার ২টি, মাইক্রোবাস ৩টি, পিকআপ ৩টি, সিএনজি ৩টি, ট্রেন ২টি, নছিমন ১টি, লেগুনা ৩টি, ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী গাড়ি ১টি, পুলিশের গাড়ি ১টি, অ্যাম্বুলেন্স ১টি, বিএনপি অফিস ৫টি, আওয়ামী লীগ অফিস ১টি, পুলিশ বক্স ১টি, কাউন্সিলর অফিস ১টি, বিদ্যুৎ অফিস ২টি, বাস কাউন্টার ১টি, শোরুম ২টিসহ আরও ২টি স্থাপনা পুড়ে গেছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২৮ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত দিনে গড়ে ৭টি করে যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়। দিনে গড়ে ৫টি করে বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৮ অক্টোবর ২৯টি, ২৯ অক্টোবর ১৯টি, ৩১ অক্টোবর ১২টি, ১ নভেম্বর ১৪টি, ২ নভেম্বর ৭টি, ৪ নভেম্বর ৬টি, ৫ নভেম্বর ১৩টি, ৬ নভেম্বর ১৩টি, ৭ নভেম্বর ২টি, ৮ নভেম্বর ৯টি, ৯ নভেম্বর ৭টি, ১০ নভেম্বর ২টি, ১১ নভেম্বর ৭টি, ১২ নভেম্বর ৭টি, ১৩ নভেম্বর ৮টি, ১৪ নভেম্বর ৪টি, ১৫ নভেম্বর ৬টি, ১৬ নভেম্বর ৭টি, ১৮ নভেম্বর ৬টি, ১৯ নভেম্বর ১৩টি, ২০ নভেম্বর ৬টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মোট ১৯৭টি আগুন নির্বাপণ করতে সারাদেশে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ৩৪১টি ইউনিট ও ১৮৮৮ জন জনবল কাজ করেছে।
আরও দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিস কর্তৃক অগ্নি নির্বাপণ কার্যক্রমে সারাদেশে ফায়ার সার্ভিসের ২ জনসহ ৫ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।