আরও ৩০ ফিলিস্তিনির মুক্তি দিলো ইসরায়েল, হামাস ছাড়ল ১৬ জনকে

মত ও পথ ডেস্ক

সংগৃহীত ছবি

যুদ্ধবিরতির ৫ম দিন ১৬ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এই জিম্মিদের মধ্যে ১০ জন ইসরায়েলি, ৩ জন ইসরায়েলি বংশোদ্ভূত জার্মান, ২ জন ইসরায়েলি বংশোদ্ভূত মার্কিন এবং ১ জন নেদারল্যান্ডসের নাগরিক।

বুধবার আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট কমিটির প্রতিনিধিদের কাছে তাদের হস্তানন্তর করা হয়েছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

universel cardiac hospital

ইসরায়েলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মুক্তি পাওয়া এই জিম্মিরা সেখানকার ভূখণ্ডে ঢোকার পর ৫টি হাসপাতালে তাদের প্রাথমিক শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।

একই দিন বিভিন্ন কারাগার থেকে ৩০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।

টানা দেড় মাসেরও বেশি সময় যুদ্ধ চলার পর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি চলছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে। বিরতির গত ছয় দিনে মোট ৯৭ জন জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস।

অন্যদিকে একই সময়সীমায় ইসরায়েলের বিভিন্ন কারগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ১৮০ জন ফিলিস্তিনি।

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ১৬ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনী।

ইসরায়েলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন ১৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহত এই ফিলিস্তিনিদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি।

অন্যদিকে, হামাস যোদ্ধাদের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক।

ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলার চালানোর দিন এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে শত শত সামরিক-বেসামরিক মানুষকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে গিয়েছিলেন হামাসের যোদ্ধারা। এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৮ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন।

গত নভেম্বরের মাঝামাঝি ইসরায়েলের যুদ্ধকালীণ মন্ত্রিসভার কাছে একটি প্রস্তাব পাঠায় হামাস। সেই প্রস্তাবে গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ইসরায়েল যদি গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে, রাফাহ ক্রসিংয়ে অপেক্ষারত ত্রাণ, জ্বালানি ও মানবিক সহায়তা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে প্রবেশ করতে দেয় এবং ইসরায়েলি কারাগারগুলো থেকে অন্তত ১৫০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তাহলে নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে থেকে ৫০ জনকে ছেড়ে দেবে হামাস।

ইসরায়েল সেই প্রস্তাব মেনে নিলে ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হয় ৪ দিনের যুদ্ধবিরতি। সোমবার যুদ্ধবিরতির শেষ দিনে সেটির মেয়াদ আরও ২ দিন বাড়ানো হয়। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, প্রতি ১০ জন জিম্মির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ একদিন করে বাড়াতে রাজি আছে ইসরায়েল।

সূত্র : সিএনএন

শেয়ার করুন