হেনরি কিসিঞ্জার আর নেই

মত ও পথ ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার। সংগৃহীত ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার মারা গেছেন। সাবেক এই মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিক একজন নোবেলজয়ী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। স্থানীয় সময় বুধবার (২৯ নভেম্বর) ১০০ বছর বয়সে মারা যান তিনি।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

universel cardiac hospital

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিতর্কিত নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এবং প্রভাবশালী কূটনীতিক হেনরি কিসিঞ্জার বুধবার মারা গেছেন বলে কিসিঞ্জার অ্যাসোসিয়েটস ইনকর্পোরেটেড জানিয়েছে।

কিসিঞ্জার অ্যাসোসিয়েটস জানিয়েছে, সাবেক দুই মার্কিন প্রেসিডেন্টের অধীনে কাজ করে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতিতে ব্যাপক প্রভাব রেখে যাওয়া এই কূটনীতিক কানেকটিকাটে তার বাড়িতে মারা গেছেন।

রয়টার্স বলছে, চলতি বছরের মে মাসেই শতবর্ষ পার করেন হেনরি কিসিঞ্জার। কিন্তু এরপরও নানা কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন তিনি। তিনি হোয়াইট হাউসে মিটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন, নেতৃত্বের শৈলীর ওপর একটি বই প্রকাশ করেছিলেন এবং উত্তর কোরিয়ার সৃষ্ট পারমাণবিক হুমকি সম্পর্কে সিনেট কমিটির সামনে সাক্ষ্যও দিয়েছিলেন।

আর ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে দেখা করতে আকস্মিক সফরে বেইজিংয়ে যান।

১৯৭০-এর দশকে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের অধীনে সেক্রেটারি অব স্টেট তথা পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় তৎকালীন সময়ের বহু যুগ-পরিবর্তনকারী বৈশ্বিক ইভেন্টে তার হাত ছিল।

তার প্রচেষ্টায় চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের সূচনা, মার্কিন-সোভিয়েত অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আলোচনা, ইসরায়েল এবং তার আরব প্রতিবেশীদের মধ্যে সম্প্রসারিত সম্পর্ক এবং উত্তর ভিয়েতনামের সাথে প্যারিস শান্তি চুক্তি ছিল তার সেই কূটনৈতিক দক্ষতারই প্রমাণ।

১৯৭৪ সালে নিক্সনের পদত্যাগের পর মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির প্রধান স্থপতি হিসেবে কিসিঞ্জারের রাজত্ব অনেকটা ক্ষয় হয়ে যায়। তারপরও প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডের অধীনে তিনি কূটনৈতিক শক্তি হিসেবে কাজ করেছেন এবং তার বাকি জীবনজুড়ে কূটনীতি-সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে তিনি দৃঢ় মতামত প্রদান অব্যাহত রেখেছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ২৭ মে হেনরি কিসিঞ্জার তার শতবর্ষ উদযাপন করেন। মার্কিন ইতিহাসে তিনিই একমাত্র কর্মকর্তা যিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে উভয় দায়িত্ব পালন করেছেন।

এছাড়া তাকে মার্কিন কূটনীতির পূর্বসূরি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে তার বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গি ১৯৭০-এর দশকে তৎকালীন বিশ্ব বাস্তবতায় বিস্তৃত পরিসরে ওয়াশিংটনের নীতিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।

শেয়ার করুন