দেশে বৈদেশিক মুদ্রা ডলারের চরম সংকট চলছে। সংকট সামলাতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। আকুসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিল পরিশোধের কারণেও কমছে রিজার্ভ।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) দেশের রিজার্ভ কমেছে ছয় বিলিয়ন ডলারের বেশি। এতে গ্রস রিজার্ভ নেমে এসেছে ২৫ বিলিয়নে। আর বিপিএম-৬ অনুযায়ী আরও কমে ২০ বিলিয়নের নিচে নেমে যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের শুরুতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। বৃহস্পতিবার তা কমে দাাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ পাঁচ মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে ৬ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার।
তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) শর্ত পরিপালন করে রিজার্ভ বিপিএম-৬ অনুযায়ী হিসাব করলে বর্তমানে গ্রস রিজার্ভ দাঁড়ায় ১৯ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলারে। সব মিলিয়ে দেশের ব্যবহারযোগ্য রির্জাভ হবে ১৬ বিলিয়ন ডলার বা তার চেয়েও কিছু কম।
ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট ডলার-সংকট ঠেকাতে একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবুও সংকট সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। এতে টাকার অবমূল্যায়ন ঠেকানোর পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজন মেটাতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে। এ কারণে রিজার্ভ কমছে। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিদেশি ঋণের প্রবাহ বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
মূলত ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার সংকট থাকায় জ্বালানি ও নিত্যপণ্য আমদানি স্বাভাবিক রাখতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে চাপ বাড়ছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভের ওপর।
গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে মোট ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়েছিল। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রিজার্ভ থেকে ছয় বিলিয়ন ডলারের বেশি ডলার বিক্রি করা হয়েছে। এতে ছয় মাসে রিজার্ভ কমেছে ছয় বিলিয়নের বেশি। অর্থাৎ প্রতিমাসে গড়ে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ কমেছে।