আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন মাঠ পর্যায়ে পর্যবেক্ষণের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামসহ দেশীয় আরও ২৯টি পর্যবেক্ষক সংস্থা।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপে এই ২৯টি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দিতে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে সংস্থাগুলোর বিষয়ে কারও কোনো দাবি/আপত্তি/অভিযোগ থাকলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিব বরাবর তা দাখিল করতে হবে। এরপর সেই দাবি/আপত্তি/অভিযোগের ওপর শুনানি করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
এই ২৯ সংস্থার বিষয়ে আপত্তি জানানোর শেষ দিন সোমবার (৩ ডিসেম্বর)। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে এসব সংস্থার বিরুদ্ধে কোনো আপত্তি না আসায় নিবন্ধন দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তির আলোকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির আবেদনগুলো যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই শেষে এ সংক্রান্ত নীতিমালার ৪.৪ (ক) অনুচ্ছেদের আলোকে নিম্নবর্ণিত ২৯টি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কোনো দাবি/আপত্তি/অভিযোগ থাকলে তা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশন সচিব বরাবর লিখিতভাবে জানাতে হবে। বিজ্ঞপ্তিটি বুধবার জারি হতে পারে।
ইসি আরও জানায়, কোনো সংস্থার বিরুদ্ধে দাবি/আপত্তি/অভিযোগ থাকলে তার স্বপক্ষে উপযুক্ত প্রমাণাদিসহ আপত্তিকারীর নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর উল্লেখপূর্বক ৬ সেট আপত্তি দাখিল করতে হবে। আপত্তির শুনানি শেষে তা গ্রহণ বা বাতিল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। এ বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। গণবিজ্ঞপ্তিটি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে যাবে বলে জানিয়েছে ইসি।
এর আগে ইসি নির্বাচিত ৬৭টি সংস্থাকে পাঁচ বছরের জন্য নিবন্ধন দেয়। ২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব ধরনের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারবে এই ৬৭ সংস্থা। নতুন করে ২৯টি সংস্থা নিবন্ধন পেলে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী দেশীয় মোট সংস্থার সংখ্যা দাঁড়াবে ৯৬টি। সবগুলো সংস্থা আগামী পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুমতি পাবে।
নতুন যে ২৯ সংস্থা নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে
ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন অব দ্য রুরাল পূওর (ডরপ), প্রত্যাশা সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা, সোসাইটি ফর রুরাল বেসিক নীড় (স্রাবন), সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন, ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম, রুরাল ভিশন (আরভি), তরফসরতাজ শান্তি সংঘ (টিএসএস) বগুড়া, পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ফর সোস্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট (পাশা), পাথওয়ে, এমপাওয়ারমেন্ট থুল অফ দ্য কমন পিপল (এলকপ), জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট, নাইস ফাউন্ডেশন, নারী উন্নয়ন সংস্থা, সুফিয়া হানিফ ফাউন্ডেশন, সোস্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট কমিউনিটি অর্গানাইজেশন (সাকো), সবার তরে আমরা ফাউন্ডেশন (এসটিএএফ) ও বিয়ান মনি সোসাইটি।
এছাড়াও রয়েছে অগ্রগতি সেবা সংস্থা (আসেস), আল-কোরআন প্রচার সংস্থা (আকপস) বাংলাদেশ, ইন্টারন্যাশনাল আসফ লিগ্যাল এইড ফাউন্ডেশন, এআরডি (অ্যাসোসিয়েশন ফর রুরাল ডেভেলপমেন্ট), বাংলাদেশ মানবাধিকার সমন্বয় পরিষদ (বামাসপ), রাজারহাট স্বাবলম্বী সংস্থা, সংগতি সমাজ কল্যাণ সংস্থা, উদ্ভাবনী মহিলা সংস্থা, ভলান্টারি অর্গানাইজেশন ফর দ্য নীডি (ভন), দিনাজপুর পল্লী উন্নয়ন প্ৰচেষ্টা (ডিপিইউপি), সেলফ ডেভলপমেন্ট ইনিসিয়েটিভ (এসডিআই) ও বেডো আর্থসামাজিক কেন্দ্ৰ।
এদিকে, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বিদেশি কোনো পর্যবেক্ষক সংস্থা বা সাংবাদিক আগ্রহ দেখাতে বৃহস্পতিবারের (৭ ডিসেম্বর) মধ্যে তাদের আবেদন করতে হবে। ২১ নভেম্বর পর্যন্ত এ আবেদনের সময়সীমা থাকলেও পরে তা ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত ১১৭ বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক আবেদন করেছেন বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ইসির পক্ষ থেকে ৩৮টি দেশ ও বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার ১১৪ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ভোট পর্যবেক্ষণ করতে চাইলে তাদেরও ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তা নিশ্চিত করতে হবে।