রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক চেয়ারম্যানকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বিকেলে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই চেয়ারম্যান।
অভিযোগকারী ওই ইউপি চেয়ারম্যানের নাম মো. মেরাজুল ইসলাম। তিনি রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পাকুড়িয়া ইউপির চেয়ারম্যান। তিনি রাজশাহী-৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা রাহেনুল হকের পক্ষে কাজ করছেন। এই আসনে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম।
লিখিত অভিযোগে মেরাজুল ইসলাম উল্লেখ করেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হকের একজন কর্মী ও সমর্থক তিনি। ২ ডিসেম্বর চারঘাটে ফরহাদ আলাউদ্দীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় জনসমক্ষে তাকে ‘কুলাঙ্গার’ বলে অপবাদসহ বিভিন্ন উসকানিমূলক বক্তব্য দেন মো. শাহরিয়ার আলম।
তিনি (প্রতিমন্ত্রী) ১৭ ডিসেম্বরের পর তাকে দেখে নেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে নাগরিক হিসেবে তার সম্মানহানি ঘটেছে এবং বিভিন্নভাবে হুমকির কারণে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এটি নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘনও।
অভিযোগের সঙ্গে শাহরিয়ার আলমের বক্তব্য দেওয়ার একটি ভিডিও ফুটেজ রিটার্নিং কর্মকর্তাকে দিয়েছেন মেরাজুল। এ ছাড়া তিনি ভিডিওটি নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেছেন।
ভিডিওতে প্রতিমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘১৯৯৬ থেকে ২০০১ আমাদের অনেকের চরিত্র হনন করা হয়েছে। নেতারা বিভ্রান্ত করেছেন বলেই কর্মীদের চরিত্র হনন হয়েছে। কারণ, কর্মীরা তো সবকিছু বোঝেন না, জানেন না, জ্ঞান নেই। কর্মীরা ২০২৩ সালে এসেও অনেক কিছু জানেন না বলে ওই মেরাজের মতো একটা কুলাঙ্গার একটা অপব্যাখ্যা দিয়ে সুস্থ শরীরে এখান থেকে চলে যেতে পারে। আমি বেশি কথা বলতে চাই না। ওই যে বললাম। ১৭ তারিখ পর্যন্ত কন্ট্রোল। ১৭ তারিখ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ। ১৭-এর পর যাত্রা হবে নিয়ন্ত্রণহীন। কত পরিকল্পনা দেখলাম। যে দায়িত্বে থাকি, যে কাজ করি। এর মধ্যেও কাজ করলাম বসে বসে…।’
মেরাজুল ইসলাম বুধবার রাতে বলেন, তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া হুমকি দেওয়ার একটি ভিডিও দিয়েছেন। কাল তিনি সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় চিঠি দেবেন। থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিসহ আরও কিছু করবেন। আতঙ্কে আছেন জানিয়ে বলেন, ‘একজন মন্ত্রী প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন। আতঙ্কে তো আছিই। তবে আমি তো রাজনীতি করে এসেছি। ছাত্রলীগের রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। হুমকিতে আর ঘরে বসে থাকা যাবে না। তাহলে তো রাজনীতিই করা যাবে না।’
অভিযোগের বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, ঘটনা সত্য হলে এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।