ইসরায়েলের বর্বরোচিত বিমান হামলায় বিপর্যস্ত ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। স্থল পথেও সেনা অভিযান চলার কারণে ভূখণ্ডটিতে সৃষ্টি হয়েছে মানবিক সংকট। এমন পরিস্থিতিতে জীবন বাঁচাতে নিরাপদ স্থানে যেতে চান লাখ লাখ বাসিন্দা।
কিন্তু অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ড থেকে বের হওয়ার যেন কোনও পথ নেই। আর তাই নিঃশর্তভাবে রাফাহ ক্রসিং খুলে দেওয়ার জন্য মিসরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইরান।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের জন্য মিসরের রাফাহ ক্রসিং নিঃশর্ত খোলার আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান।
বুধবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘এটি প্রত্যাশিত যে, সমগ্র গাজা উপত্যকায় ওষুধ, খাদ্য এবং জ্বালানি পাঠানোর জন্য নিঃশর্তভাবে রাফাহ ক্রসিং খুলে দেবে মিশরের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘আজ গাজার নারী ও শিশুরা রাফাহ ক্রসিংয়ের দিকে তাকিয়ে আছে এবং তারা পানি, ওষুধ বা খাবার ছাড়াই সেখানে থাকছেন। এই পরিস্থিতিতে রাফাহ ক্রসিং খোলার বিষয়ে তারা মিসরের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছেন।’
মূলত রাফাহ হচ্ছে মিসরের সিনাই মরুভূমি সংলগ্ন একটি সীমান্ত পথ যেটি গাজার সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত। গাজা থেকে বের হওয়ার আরও দুটি সীমান্তপথ রয়েছে, যেগুলো পুরোপুরি ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে এবং সেই দুটিই এখন বন্ধ।
ফলে মিসরের এই সীমান্ত পথটিই এখন গাজার উদ্বাস্তুদের একমাত্র ভরসা। তবে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সীমান্তটি বন্ধ করে দিয়েছে মিসর।
মূলত রাফাহ সীমান্তটিই এখন বেসামরিক নাগরিকদের জন্য গাজা ত্যাগ করার একমাত্র স্থলপথ। গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর ক্ষেত্রেও রাফাহ এখন গুরুত্বপূর্ণ।
প্রসঙ্গত, হামাসের সাথে এক সপ্তাহব্যাপী মানবিক বিরতির পর গত শুক্রবার থেকে গাজা উপত্যকায় পুনরায় বিমান ও স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। বিরতির পর শুরু হওয়া এই অভিযানে গাজার দক্ষিণাঞ্চলকে লক্ষ্য করেই হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার সেনারা।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর হামাসের আন্তঃসীমান্ত হামলার পর ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে সেখানে কমপক্ষে ১৬ হাজার ২৪৮ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৪৩ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন।
নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৭ হাজার ১১২ জন শিশু এবং ৪ হাজার ৮৮৫ জন নারী রয়েছেন। এছাড়া ভূখণ্ডটিতে এখনও প্রায় ৭ হাজার ৬০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।