ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাতের মধ্যে ইসরায়েলের কাছে এবার ৪৫ হাজার মেরকাভা ট্যাংকের গোলা বিক্রির পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গোলা বিক্রির এই প্রস্তাব পাস করতে জো বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে মার্কিন কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রস্তাবটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চারটি সূত্রের কাছ থেকে এ–সংক্রান্ত তথ্য পেয়েছে রয়টার্স।
গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ১৭ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। যার বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এ পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের কাছে বাইডেন প্রশাসনের কামানের গোলা বিক্রির উদ্যোগ চলমান যুদ্ধে গাজার নিরীহ মানুষের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলের কাছে এসব কামানের গোলা বিক্রি করে ৫০ কোটি ডলারের বেশি আয় করবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ইউক্রেন ও ইসরায়েলের জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া ১১ হাজার কোটি ডলারের বেশি মূল্যের নতুন সহায়তা তহবিলের অংশ নয় এ উদ্যোগ। সম্প্রতি বাইডেনের এ সহায়তা প্রস্তাবের ওপর আনা একটি বিল আটকে দিয়েছে মার্কিন সিনেট।
এ পরিস্থিতিতে বাইডেন প্রশাসনের আশঙ্কা, ইসরায়েলের কাছে কামানের গোলা বিক্রির প্রস্তাব আটকে যেতে পারে। তাই প্রস্তাবটি পাসে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কংগ্রেসের প্রতি জোর আবেদন জানানো হয়েছে বলে বর্তমান ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তাদের তরফ থেকে জেনেছে রয়টার্স।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা জোস পল রয়টার্সকে বলেন, কামানের গোলা বিক্রির প্রস্তাবটি দ্রুত অনুমোদন করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে পরারাষ্ট্র দপ্তর। তিনি জানান, গত সপ্তাহের শুরুতে কংগ্রেসের কমিটির কাছে গোলা বিক্রির প্রস্তাবটি জমা দেওয়া হয়েছে। যাচাই–বাছাইয়ের জন্য ২০ দিন লাগতে পারে।
উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন পল। তিনি জো বাইডেনের প্রশাসনের প্রতি ইসরায়েলকে ‘অন্ধভাবে সমর্থন’ দেওয়ার অভিযোগ এনে চাকরি ছাড়েন।
সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র আরও জানিয়েছে, ইসরায়েলের কাছে ৪৫ হাজারের মধ্যে ১৩ হাজার কামানের গোলা বিক্রিতে জরুরি প্রয়োজনে ‘আর্মস এক্সপোর্ট কন্ট্রোল অ্যাক্ট’ ব্যবহার করতে পারে বাইডেন প্রশাসন। এর আওতায় কংগ্রেস কমিটিকে ও যাচাই–বাছাইয়ের নির্ধারিত সময়সীমা এড়িয়ে গোলা বিক্রির সুযোগ কাজে লাগানো হতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনার বিষয়টি অস্বীকারও করা হয়নি।