পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ভারত থেকে আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলা ৫২ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ দ্রুত দেশে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে ভারতে বাংলাদেশ দূতবাসকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আজ রোববার চিঠি পাঠিয়েছে। এছাড়া দেশে যৌক্তিক মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রয় নিশ্চিত করতে কঠোর নজরদারি করার জন্য সব জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ভারত পেঁয়াজ রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার প্রেক্ষিতে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। তবে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে সেখান থেকে বাংলাদেশে ৫২ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়। এখন এই পেঁয়াজ দ্রুত দেশে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ রোববার বলেন, ভারত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগেই সেখান থেকে আমদানির জন্য ৫২ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজের এলসি খোলা হয়। এই পেঁয়াজ দ্রুত দেশে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আমরা বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। কীভাবে বিকল্প দেশ থেকে পেঁয়াজের আমদানি বাড়ানো যায়, সে চেষ্টা চলছে। একইসঙ্গে টিসিবির মাধ্যমে স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে পেঁয়াজ বিক্রি অব্যাহত থাকবে। দেশের সর্বত্র যৌক্তিক মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রয় নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দেশের মানুষ কষ্ট পায়, এমন কিছু করা ঠিক হবে না উল্লেখ করে তিনি ব্যবসায়ীদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহবান জানান। সরকারের এই জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, কেবল সরকার সব ঠিক করে দেবে এমন ভাবাটা ঠিক নয়। ব্যবসায়ীদের বুঝতে হবে দেশের জনগনের জন্যই ব্যবসা।
তিনি বলেন, ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করলো আর দেশে একদিনের ব্যবধানে পণ্যটির দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেলো! এটা ব্যবসায়ীদের দায়িত্বশীল আচরণ নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন। রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ভ্যাট দিবসের সেমিনারে তপন কান্তি ঘোষ তার বক্তব্যে একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ৮০ টাকা বাড়ে কীভাবে- এমন প্রশ্ন রেখে বলেন, যিনি একদিন আগে ১২০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করলেন, পরদিন কিভাবে সেটার দাম ২০০ টাকা হয়ে গেলো?
তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের সংকট তৈরি হলেই অনেক ব্যবসায়ী এর সুযোগ নিয়ে থাকেন। গতকাল হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা বেড়ে গেছে। এটা অবশ্যই দায়িত্বশীল আচরণ নয়। এদিকে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ এবং সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সারাদেশে অভিযান পরিচালনা করছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।