গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে মঙ্গলবার সাধারণ পরিষদে ভোটের সম্ভাবনা

মত ও পথ ডেস্ক

গাজায় ইসরায়েলি হামলা। ছবি : রয়টার্স

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ।

এই পরিস্থিতে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভোটাভুটি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কূটনীতিকদের বরাত দিয়ে সোমবার (১১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির দাবিতে ১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মঙ্গলবার একটি খসড়া প্রস্তাবে ভোটাভুটি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে রোববার কূটনীতিকরা জানিয়েছেন।

এর আগে গাজায় অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাবে গত শুক্রবার ভেটো দেয় যুক্তরাষ্ট্র। মূলত এরপরই সাধারণ পরিষদে ভোটাভুটির এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত অক্টোবরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গাজায় অবিলম্বে, টেকসই ও স্থায়ী মানবিক যুদ্ধবিরতির জন্য আনা একটি প্রস্তাব দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে গৃহীত হয়। সেই প্রস্তা‌বের প‌ক্ষে ভোট দিয়েছিল বাংলাদেশ। এছাড়া সেসময় ভোটাভুটিতে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ১২১টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে, ১৪টি বিপক্ষে এবং ৪৪টি দেশ ভোট দানে বিরত ছিল।

অবশ্য চলতি ডিসেম্বর মাসেই গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ফের আটকে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। গত শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি উত্থাপন করে অস্থায়ী সদস্য সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)।

সেই প্রস্তাবে উপত্যকায় দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি দু’টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছিল আমিরাত। প্রথমত, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সব বেসামরিক লোকজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং দ্বিতীয়ত, অবিলম্বে ও শর্তহীনভাবে সব বন্দিকে মুক্ত করতে হবে।

শুক্রবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে প্রস্তাবটি পেশ করার পর সেটি গৃহীত হয় এবং সদস্যরাষ্ট্রগুলোর ভোটের জন্য উত্থাপন করা হয়। ভোটে পরিষদের স্থায়ী-অস্থায়ী ১৫ সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে ১৩টিই এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়।

বাদ ছিল কেবল দুই স্থায়ী সদস্যরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাজ্য ভোটদান থেকে বিরত থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবটির বিরুদ্ধে সরাসরি আপত্তি বা ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করে। এতে করে প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায়।

পরে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে আপত্তি বা ভেটো দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কঠোর নিন্দা জানান ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তিনি বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আটকে দেওয়ার অর্থ হলো আগ্রাসী ও আদর্শহীন শক্তির পক্ষাবলম্বন করা, যাদের কাছে মানবিকতাবোধ ও নীতি-নৈতিকতার ন্যূনতম কোনও মূল্য নেই।

প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস আরও বলেন, গাজায় ফিলিস্তিনি শিশু, নারী এবং বয়স্ক লোকজনের রক্তপাতের জন্য দখলদার বাহিনীর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রও দায়ী। কারণ তারা বছরের পর বছর ধরে দখলদার শক্তিকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে আসছে।

শেয়ার করুন