গাজীপুরে রেললাইন উপড়ানোর মূল পরিকল্পনাকারীদের শিগগির চিহ্নিত করে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আজ (বুধবার) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
রেল মন্ত্রণালয় থেকে আপনার কাছে দুই হাজার ৭০০ রেল পুলিশ চাওয়া হয়েছে তাদের নিরাপত্তার জন্য। আর গতকালকের গাজীপুরের ঘটনার আপডেট কী- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল যে ঘটনা ঘটেছে আপনারা দেখেছেন ওই জায়গাটি এমন এলাকা যেখানে জনমানুষ থাকে না, জনবসতিও নাই। একটা কুয়াশার রাত ছিল। যাই হোক যেভাবে হোক দুর্ঘটনাটা ঘটেছে। এজন্য দুটি তদন্ত টিম তাৎক্ষণিক দেওয়া হয়েছে। তারা কাজ করছে।’
তিনি বলেন, আপনারা জানেন হাজার-হাজার কিলোমিটার রেললাইন এখানে সারা বাংলাদেশে। এরা টার্গেট করেছে যেখানে নাকি মানুষ থাকে না, সেই জায়গায় টার্গেট করেছে এবং টার্গেট করে তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে। রেল মন্ত্রণালয় থেকে যে চিঠিটি দিয়েছে আমাদের কাছে, আরও ফোর্স চেয়েছে। আমরা নিশ্চয়ই আলোচনা করে…আমাদের রেল পুলিশ বলে আমাদের একটা ডিপার্টমেন্টই রয়েছে, তারা আলোচনা করে সেখানে লোকবল বৃদ্ধির যা প্রয়োজন নিশ্চয়ই করা হবে।
এ ঘটনায় কেউ এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে কি না- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি মাস্টারপ্ল্যানার (মূল পরিকল্পনাকারী) যারা, সবাইকেই আমরা আইডিন্টিফাই (চিহ্নিত) করবো। শিগগির আমরা ধরতে পারব বলে আমরা বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, রেললাইন উপড়ে ফেলা সত্যিই অত্যন্ত দুঃখজনক। যারা দেশকে ভালোবাসে তারা এ কাজটি করতে পারে না।
‘১৪ সনে আপনারা অগ্নিসন্ত্রাস দেখেছেন। তখনও রেললাইন উপড়ে ফেলা হয়েছিল। সেটাও দেখেছেন। জানমালের ক্ষতি তো হয়েছে, নিরীহ মানুষকেও হত্যা করা হয়েছে। সেসব দৃশ্য দেখেছেন। এবারও আমরা সেটি লক্ষ্য করছি। তারা শুধু গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করছে না, রেললাইনও উপড়ে ফেলেছে। এ ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন এবং সাতজন গুরুতর আহত অবস্থায় আছে।’
আসাদুজ্জামান খান বলেন, তারা মনে করে তারা একটি অসংবিধানিক ওয়েতে কীভাবে আবার ষড়যন্ত্র করে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে আরেকটি সরকার পতন করা যায় কি না, সেটারই প্রচেষ্টায় তারা এগুলো করছে। এ দেশের জনগণ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এটা তারা স্পষ্ট জেনেছে। সে জন্যই নির্বাচন না করে তারা ঘটনার অবতারণা ঘটাচ্ছে। আমরা মনে করি এদেশের জনগণ এসবগুলোর সঠিক জবাব দেবে ইনশাআল্লাহ।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গাড়িতে যতগুলো অগ্নিসংযোগ হয়েছে সবগুলোকেই ধরা হয়েছে। এখন অগ্নিসংযোগের একটা নতুন মাত্রা তারা তৈরি শুরু করেছে। রাস্তার টোকাইদের তিন হাজার, দুই হাজার বা পাঁচ হাজার করে এরা কন্টাক্টে নিয়ে যায় এবং যারা নিয়ে যাচ্ছে টোকাইরা তাদের নাম আমাদের বলছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ইতোমধ্যে ব্যবস্থা শুরু হয়ে গেছে। বাসের অগ্নিসংযোগ যারাই করছেন হয় আমাদের জনতার কাছে ধরা পড়ছেন কিংবা আমাদের তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
পাইকগাছায় গভীর রাতে আদালতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করার ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই জায়গায় কারও গাফিলতি আছে কি না, আমরা দেখছি এবং যারা করেছে আমরা নিশ্চয়ই আমাদের যে তথ্য, সে তথ্য অনুযায়ী আমরা ধরে ফেলতে পারবো।
এসময় বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য তিনি পুলিশের প্রশংসা করেন। মন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি আমাদের নির্বাচনের জন্য যে পুলিশ৷ সে জায়গায়ও তারা তৎপর রয়েছে। আমি মনে করি ১৫ বছর আগের যে পুলিশ, এ পুলিশের মধ্যে অনেক ডিফারেন্স। এরা দেশপ্রেমিক পুলিশ, এরা দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করছে। আমরা মনে করি এরা প্রফেশনাল এবং তারা অনেক দক্ষ। কাজেই এরা সুন্দরভাবে জানমাল রক্ষা করে নির্বাচনটি সুন্দরভাবে উঠিয়ে দিতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।