আগামী বছর ইউক্রেন যুদ্ধ ও রাশিয়ার নিরাপত্তায় ১৫৭ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করার ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আগামী বছর সামরিক খাতে রাশিয়ার এই ব্যয় হবে স্নায়ুযুদ্ধের পর সবচেয়ে বেশি। চলতি বছরের ব্যয়ের চেয়ে তা ৭০ শতাংশ বেশি হবে। খবর আল জাজিরার।
অপর দিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই যুদ্ধের জন্য তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ৬১ দশমিক ৪ বিলিয়ন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ৭৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এই যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনপ্রণেতাদের মধ্যে মতভিন্নতায় আটকে গেছে এসব সামরিক সহায়তা।
গত কয়েক দিনে পুতিন ও জেলেনস্কি—দুজনই সংবাদ সম্মেলনে যুদ্ধ ঘিরে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন। তাতে রুশ প্রেসিডেন্টের কণ্ঠে যে আত্মবিশ্বাস ঝরেছে, তা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বক্তব্যকে ম্লান করে দিয়েছে।
যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেন বাহিনী যে গ্রীষ্মকালীন পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে, সেখানে উল্লেখযোগ্যভাবে কোনো সীমান্ত এলাকা পুনর্দখল হয়নি। লড়াই নিয়ে ইউক্রেনের জেনারেলদের মধ্যে মতভিন্নতার খবর বেরিয়েছে। অপর দিকে রুশ বাহিনী সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের যুদ্ধক্ষেত্রে নতুন গতি পেয়েছে। তাদের আক্রমণের মুখে ইউক্রেন বাহিনীই নিজেদের আত্মরক্ষামূলক অবস্থান নিতে বাধ্য হয়েছে।
১৪ ডিসেম্বর মস্কোর ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টারে বর্ষ সমাপনী সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, বাস্তবে লড়াইয়ের সব জায়গায় আমাদের সশস্ত্র বাহিনী ধীরে ধীরে তাদের অবস্থানের উন্নতি করছে। কার্যত সবাই সক্রিয় রয়েছে। এর তিনদিন পর পুতিন তার ইউনাইটেড রাশিয়া পার্টির বৈঠকে বক্তব্যে যুদ্ধে জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটান।
ইউক্রেনকে নাৎসিমুক্ত ও সামরিক শক্তিহীন করার যে কথা বলে দেশটিতে আক্রমণ করেছিলেন, সেই কথা পুনরাবৃত্তি করে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, রাশিয়া হয় একটি সার্বভৌম, সম্পূর্ণরূপে নিজেদের ওপর নির্ভরশীল শক্তি হবে, অন্যথায় এর কিছুই থাকবে না।
পক্ষান্তরে ১৯ ডিসেম্বর বর্ষ সমাপনী উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের তহবিল আটকে যাওয়া নিয়ে নানা প্রশ্নের মুখে পড়েন। তিনি বলেন, আমি আত্মবিশ্বাসী যে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পতন হতে দেবে না এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যেসব বিষয়ে আমাদের সম্মতি হয়েছে, সেগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হবে।