ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। দেশটির বর্বর আগ্রাসনে গত ২৪ ঘণ্টায় ভূখণ্ডটিতে ২৪১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৪০০ মানুষ।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে অন্তত ২৪১ জন নিহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এই যুদ্ধকে তার জনগণের বিরুদ্ধে ‘গুরুতর অপরাধ’ বলে অভিহিত করেছেন।
ইসরায়েলের সেনাপ্রধান হারজি হালেভি বলেছেন, হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষ ‘আরও অনেক মাস’ চলবে। ইসরায়েল বলেছে, তারা মঙ্গলবার ১০০ টিরও বেশি স্থাপনায় হামলা করেছে। বুধবার ভোররাতেও গাজা উপত্যকা থেকে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৩৮২ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের মতে, ১১ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা লড়াইয়ে কমপক্ষে ২০ হাজার ৯১৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
এদিকে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধকে ‘বিপর্যয়ের চেয়েও বেশি’ এবং ‘বিধ্বংসী যুদ্ধের চেয়েও’ বেশি কিছু বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি এটিকে ফিলিস্তিনি জনগণের ইতিহাসে নজিরবিহীন বলে অভিহিত করেছেন।
যুদ্ধ শুরুর পর রামাল্লায় একটি মিশরীয় টিভি চ্যানেলকে দেওয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, (ধ্বংসযজ্ঞের কারণে) অঞ্চলটি অচেনা হয়ে উঠেছে। একইসঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দখলকৃত পশ্চিম তীর যেকোনও সময় বিস্ফোরিত হতে পারে।
ফিলিস্তিনি এই নেতা যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের খসড়া প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার জন্য ওয়াশিংটনকে অভিযুক্তও করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা প্রায় ২১ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। নিহতদের মধ্যে ১৪ হাজারেরও বেশি নারী ও শিশু।
আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৫৫ হাজার ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলের এই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবিরসহ বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে।