মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া, নির্বাচন বন্ধ করার সাহস বিএনপি-জামায়াতের নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে অগ্নিসন্ত্রাসী বিএনপি-জামায়াতের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সোমবার (১ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
রাজধানীর ধানমন্ডির কলাবাগান ক্রীড়াচক্র মাঠে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এ জনসভার আয়োজন করে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত আমরা ক্ষমতায় ছিলাম এবং আছি। আমাদের সময় যেহেতু ধারাবাহিকভাবে গণতন্ত্র অব্যাহত আছে, যেহেতু মানুষ একটু শান্তিতে ছিল, ওই অগ্নিসন্ত্রাসের সময় ছাড়া। বাকি সময় মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে, মানুষের আয় বেড়েছে, চিকিৎসা সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পেরেছি। আমরা মানুষের শিক্ষা অন্ন বস্ত্র বাসস্থান সবকিছুর জন্য কাজ করে মানুষের হৃদয় জয় করে তাদের ভোট পাই। আমাদের ভোট চুরির প্রয়োজন হয় না।
তিনি বলেন, যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, এটা আমার কথা না হাইকোর্টের আদেশ আছে হাইকোর্টের রায় আছে যে, ওই বিএনপি জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা দখল অবৈধ, এরশাদের ক্ষমতা দখল অবৈধ। তারাই ভোট চুরি করে, তারাই ভোট চুরি ছাড়া জিততে পারে না। ২০০৮ এর নির্বাচনে সেটা প্রমাণিত সত্য। এখন আবার তারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়, কেন নির্বাচন বানচাল করবে?
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে নির্বাচন বর্জন করছে, বর্জন করাটা খুব স্বাভাবিক। ভোট চুরি করতে পারে না, নির্বাচন করবে না। কারণ এর আগে তো ভোট চুরি করে অভ্যস্ত, চুরি করা ভোট দিয়েই তো তাদের সৃষ্টি। ক্ষমতা দখল, ক্ষমতা চুরি, ভোট চুরি এছাড়া তো তারা আর কিছু পারে না। সেজন্য নির্বাচন করতে চায় না, নির্বাচন বানচাল করবে। মানুষের ভোটের অধিকার আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করেছি, সেই অধিকার কেড়ে নেবে, নির্বাচন বন্ধ করবে—এত সাহস তাদের নাই, তারা পারবে না। তারা আগুন দিয়ে পোড়ায় বাস, গাড়ি, ট্রেন। আপনারা দেখেছেন ফিসপ্লেট খুলে দিয়ে রেলে এক্সিডেন্ট ঘটায়, যেন এক্সিডেন্ট হয়ে মানুষ মারা যায়, তারা লাশ চায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসী বিএনপি-জামায়াতের ব্যাপারে বাংলাদেশের জনগণকে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে, ওরা এদেশের সর্বনাশ করতে চায়। আগামী নির্বাচনে আপনাদের একটা কথা মনে রাখতে হবে, ওই বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাস করে আপনাদের ভোট কেড়ে নিতে চায়। আর আপনারা তার জবাব দেবেন কীভাবে? প্রত্যেকে, প্রতিটি ভোটার পরিবার-পরিজন নিয়ে সকালে ভোটকেন্দ্রে যাবেন, আপনার ভোট আপনি দেবেন কেউ যেন ঠেকাতে না পারে। তাদের উপযুক্ত জবাব দেবেন, অগ্নিসন্ত্রাসের জবাব দেবেন।
ঢাকায় ১৫টি নির্বাচনী আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি এই ১৫টা রত্ন আপনাদের সামনে তুলে দিলাম। এই ১৫টা রত্ন আপনাদের হাতে দিলাম, যারা আপনাদের সেবক হিসেবে কাজ করবে। আপনাদের সেবা করবে, ঢাকার মানুষের সেবা করবে।
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।