দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটার তালিকায় পুরুষের চেয়ে নারী ভোটার কম। এক্ষেত্রে আগেরবারের চেয়ে এবারের ব্যবধানও বেড়েছে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার থেকে জানা গেছে, ৭ জানুয়ারি ২৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন ১১ কোটি ৯৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৩৪ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৬ কোটি ৫ লাখ ৯২ হাজার ১৯৭, নারী ভোটারের সংখ্যা ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৩৯ হাজার ৮৮৯। অর্থাৎ নারীর চেয়ে ১৮ লাখ ৫২ হাজার ৩০৮ পুরুষ ভোটার বেশি। এবারের নির্বাচনে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ৮৪৮ জন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুরুষ ভোটার ছিল ৫ কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৫ জন এবং নারী ভোটার ছিল ৫ কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩১২ জন। নারীর চেয়ে সে সময় নয় লাখ ছয় হাজার ৫৩ জন পুরুষ ভোটার বেশি ছিল।
গত দুই সংসদ নির্বাচনের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে, এবার নারী ও পুরুষ ভোটারের ব্যবধান আরও বেড়েছে। আদম শুমারির রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশি। এক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ ভোটার সংখ্যার ব্যবধান বাড়ার পেছনে নারীদের ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে অনাগ্রহকে দায়ী করছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়াও বেশ কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করলেও সংস্থাটি নারী ভোটার বাড়াতে পারেনি।
২০২২ সালেও নারী ভোটার বাড়াতে নারী জনপ্রতিনিধিদের সহায়তা চেয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এজন্য সে বছর ১১ মে ইসির নির্বাচন সহায়তা শাখার সহকারী সচিব মো. মোশাররফ হোসেন সব স্থানীয় নারী জনপ্রতিনিধিদের একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেখানে বলা হয়েছিল, বিগত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে নারী ভোটার কম হওয়ার বিষয়ে যে-সব কারণ লক্ষ্য করা গেছে তার মধ্যে (১) নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহে অনীহা; (২) হিন্দু অবিবাহিত মেয়েদের পিত্রালয়ে নিবন্ধন করতে অনীহা; (৩) অবিবাহিত, অনগ্রসর ও নিরক্ষর মেয়েদের ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ কম; (৪) বাবা-মার জাতীয় পরিচয়পত্র দাখিল করতে ব্যর্থ হওয়া; (৫) রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্র দূরবর্তী হওয়া; (৬) আবহাওয়া অনুকূল না থাকা; (৭) সামাজিক সংস্কার ও ধর্মীয় অজুহাতে ছবি তুলতে অনীহা; (৮) প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীদের অসচেতনতা অন্যতম।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯টি আসনে ৪২ হাজার ২৪টি ভোটকেন্দ্র এবং দুই লাখ ৬০ হাজার ৮৫৬টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯টি আসনে ৪০ হাজার ১৮৩টি ভোটকেন্দ্রের ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ করা হয়েছিল।