দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ওআইসি, রাশিয়া, ফিলিস্তিন ও গাম্বিয়ার পর্যবেক্ষকরা। ভোটগ্রহণের সময় শেষে আজ বিকেলে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে আসেন তারা। নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা সন্তুষ্টির কথা জানিয়ে বলেন, ভোটার এবং প্রার্থীর এজেন্টদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, আমরা সন্তুষ্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের সাবেক সদস্য জিম বেটস বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। জিম বেটস বলেন, আমি যেটি দেখেছি, সেটি হচ্ছে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠ হয়েছে। বাংলাদেশে ভোট গ্রহণের সময় পৃথিবীতে সবচেয়ে কম। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে আট ঘণ্টা ভোট হয় না।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য থেকে ডেমোক্রেটিক পার্টির টিকেটে নির্বাচিত সাবেক ওই কংগ্রেস সদস্য বলেন, আমি অবশ্যই বলতে চাই, আমার দেশের গণমাধ্যম বাংলাদেশের গণমাধ্যমের মতো অনুসন্ধানী ও সৎ নয়। যেটি বাস্তবে হয়, সেটির বিষয়ে তারা রিপোর্ট করে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আরেক পর্যবেক্ষক এবং আমেরিকান গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিসের প্রধান নির্বাহী আলেক্সান্ডার গ্রে বলেন, আমি নিজের চোখে যা দেখেছি, সেটি হচ্ছে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। নির্বাচন দক্ষতার সঙ্গে পরিচালিত হয়েছে। ভোটাররা উৎসাহের সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে গেছেন। আমরা সন্তুষ্ট যে নির্বাচন অত্যন্ত দক্ষতা ও সততার সঙ্গে পরিচালনা করা হয়েছে।
ওআইসির নির্বাচন ইউনিটের প্রধান শেখ মোহাম্মদ বন্দর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পর্যবেক্ষক হিসেবে সহিংসতার কোনো চিহ্ন আমাদের চোখে পড়েনি। আমি অবাক হয়েছি, দোকান-পাট বন্ধ কেন! সড়কে কোনো মানুষ দেখা যায়নি। শহর ছিল শান্ত।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাকে দুইবার প্রশ্ন করা হয়েছে, আপনি এমন একটি দেশ থেকে এসেছেন যেখানে যুদ্ধ চলছে। বাংলাদেশে আসা কি গুরুত্বপূর্ণ? বাংলাদেশে আসার জন্য আপনার ওপর কোনো ধরনের চাপ ছিল? বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের চাপ ছিল কি না? না। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম। তিন মাস আগে আমি যখন জিম্বাবুয়েতে ছিলাম, তখন আমন্ত্রণপত্র পাই। আমি ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর থেকে এসেছি, গাজার মতো সেখানে যুদ্ধ চলছে না।
আরব ইলেকট্রোরাল ম্যানেজমেন্ট বডির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমার দেশের পাশাপাশি আমি ওই সংগঠনেও প্রতিবেদন জমা দেবো। যে কারণে এই আমন্ত্রণে সাড়া দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো অভিজ্ঞতা বিনিময়। আপনাদের অভিজ্ঞতা এবং আমি ও বাংলাদেশে আমার সহকর্মীরা আজকে যা দেখলাম। এই সফরে আমরা একে অপরের কাছ থেকে শিখলাম। এটা একটি পেশাগত সফর ছিল,’ জানান তিনি। তিনি বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ দেখে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা ভালো নির্বাচনী প্রক্রিয়া দেখেছি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি এখনো জানি না কত শতাংশ ভোট পড়েছে। সকালে যখন আমরা কেন্দ্র পরিদর্শন করি, তখন ভোটার উপস্থিতি খুবই কম ছিল। মানুষ আশা করছিল উপস্থিতি বাড়বে। যদি বাধ্যবাধকতা না থাকে, আপনি কেন্দ্রে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং কেউ আপনাকে ভোট দিতে বাধ্য করতে পারে না। ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাদের দেশে কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই, তাই এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারি না।
কম ভোটার উপস্থিতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৫ বা ১৬ শতাংশ ভোট পড়লে সেটা নির্বাচন আয়োজকদের জন্য বার্তা। এর কারণ রাজনীতিকরা বিশ্লেষণ করবেন। আমি জর্ডানে অনেক নির্বাচন দেখেছি, সেখানে ৫৫ শতাংশ ভোট পড়েছে এবং সেটা ভালো নির্বাচন ছিল। তারপরও এই বিষয়টা দেখবেন রাজনীতিক ও গবেষণা সংস্থাগুলো।