মালয়েশিয়ায় পৃথক অভিযানে বাংলাদেশিসহ মোট ২০৬ অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ। প্রথমে গত শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সেলাঙ্গর রাজ্যের শাহ আলমের কাম্পুং জালান কেবুনে একটি রিসাইক্লিং কারখানায় অভিযান চালিয়ে চার নারীসহ ১০০ অভিবাসীকে আটক করা হয়।
বুকিত আমান সিআইডি অ্যান্টি-ট্রাফিকিং ইন পারসন অ্যান্ড স্মাগলিং অফ মাইগ্রেন্টস (আটিপসম) ডি৩ এর প্রধান সহকারী পরিচালক সোফিয়ান স্যান্টং বলেন, সেলাঙ্গর শ্রম বিভাগ এবং পরিবেশ বিভাগের সহযোগিতায় তার ইউনিটের অভিযানে ৬০ বছর বয়সী স্থানীয় একজনকেও আটক করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকটি সেই জমির মালিক। যা চীনা নাগরিকদের একটি কারখানা পরিচালনার জন্য ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। যেখানে ব্যবহৃত জিনিসপত্র যেমন ইলেকট্রনিক উপাদানগুলো প্রক্রিয়া করা হত।
শনিবার সোফিয়ান স্যান্টং এক বিবৃতিতে বলেন, অন্যান্য আটক ব্যক্তিদের বয়স ১৮ থেকে ৩৯ বছর। যাদের মধ্যে ১৯ জন চীনা নাগরিক, ১০ মিয়ানমারের, ৬১ বাংলাদেশি, ২ নেপালি এবং ৮ কম্বোডিয়ান।
সোফিয়ানের মতে, অভিযানে পুলিশ ১৬ বছর বয়সী মিয়ানমার কর্মীকেও উদ্ধার করেছে যাকে শোষণের শিকার বলে সন্দেহ করা হয়েছিল।
প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, কারখানাটির ব্যবসায়িক লাইসেন্স ছিল না এবং প্রায় দেড় বছর ধরে এটি চালু ছিল। পুলিশ অ্যাটিপসম অ্যাক্ট ২০০৭-এর ১৪ ধারা এবং অভিবাসন আইন ১৯৫৯/৬৩-এর ৫৫ই ধারা, ধারা ৬(১) (সি), ৩৯ই ধারা এবং একই আইনের ১৫(১) (সি) ধারার অধীনে আরও তদন্ত করা হবে।
এদিকে শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় সেলাঙ্গর রাজ্যের রাওয়াংয়ের সেরি সেম্পাকা অ্যাপার্টমেন্টে এনফোর্সমেন্ট অভিযানে বাংলাদেশিসহ ১০৬ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে।
এনফোর্সমেন্ট বিভাগ, প্রবাসী সেবা বিভাগ, ব্যবস্থাপনা সেবা বিভাগ, নিরাপত্তা ও পাসপোর্ট বিভাগ, নীতি ও কৌশলগত পরিকল্পনা বিভাগ, সততা বিভাগ, এটিপসম এবং এএমএলএ প্রতিরোধ বিভাগ, গোয়েন্দা ও বিশেষ অভিযানের বিভিন্ন পদমর্যাদার ৩০৯ জন কর্মকর্তার সমন্বয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ৪৬৮ জনের কাগজপত্র পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্য থেকে ছয় মাস থেকে ৪৯ বছর বয়সী মোট ১০৬ জন অবৈধ অভিবাসীকে বিভিন্ন অপরাধে আটক করা হয়। আটকরা বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানের নাগরিক। তবে এ অভিযানে কতজন বাংলাদেশি রয়েছেন তা উল্লেখ করা হয়নি।
শনিবার অভিবাসন বিভাগের উপ-পরিচালক (অপারেশন) আফরি বিন এমবোক তাহা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, শহরের বাইরে অভিযানের অবস্থানটি বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। কারণ আবাসিক এলাকায় প্রবেশের পথটি অনিয়মিতভাবে পার্কিং করা যানবাহন দ্বারা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। যার কারণে চলমান যানবাহনগুলো লক্ষ্যে প্রবেশ করা কঠিন করে তোলে।
বৈধ পাসপোর্ট এবং শনাক্তকরণ নথি ছাড়া আবাসিক এলাকায় বসবাসকারী সন্দেহভাজন অবৈধদের সম্পর্কে জনসাধারণের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। শনাক্ত করা অপরাধগুলোর মধ্যে কোনো পরিচয়পত্র, নথিপত্র, ওভারস্টেয়িং এবং অন্যান্য অপরাধ যা ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ১৯৫৯/৬৩, পাসপোর্ট অ্যাক্ট ১৯৬৬ এবং ইমিগ্রেশন রেগুলেশনস ১৯৬৩ লঙ্ঘন করে। আরও তদন্তের জন্য আটকদের বুকিত জলিল ইমিগ্রেশন ডিপোতে রাখা হয়েছে।