বিশ্বনেতাদের ওপর ‘ক্ষুব্ধ’ চীন

মত ও পথ ডেস্ক

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় লাই চিং-তেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। তারা দ্বীপটিতে অধিক ভোটারের উপস্থিতি ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রশংসা করেছেন। কিন্তু চীন চেয়েছিল ভিন্ন কিছু। তারা নির্বাচনে জয়ী ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) প্রার্থীর পরাজয় চেয়েছিল। তাই এখন বিশ্বনেতাদের প্রশংসায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ বেইজিং। খবর গার্ডিয়ানের।

গত শনিবার তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ৪০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছেন লাই। তিনি ডিপিপি নেতা সাই ইং ওয়েনের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন। ২০১৬ সাল থেকে ক্ষমতায় ছিলেন সাই। তাইওয়ানকে চীনের সঙ্গে একীভূত করার প্রয়াসে বড় বাধা ছিলেন সাই। সেই পররাষ্ট্রনীতিকেই রক্ষা করে যেতে চান উত্তরসূরি লাই।

universel cardiac hospital

ডিপিপি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র আবারও তাইওয়ানের শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার শক্তি প্রদর্শনের জন্য তাইওয়ানের জনগণকে অভিনন্দন জানান। যদিও তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তা সত্ত্বেও তাইওয়ানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সমর্থক ও অস্ত্র সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্র। আগামী সপ্তাহে সেখানে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

লাই চিং-তে জয়ী হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ান প্রণালিজুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্র চায় মতবিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান। চায় জবরদস্তি ও চাপমুক্ত পরিবেশ।

গতকাল রোববার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এ বিবৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বেইজিং। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে, তাইওয়ানের সঙ্গে ওয়াশিংটন সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও অন্যান্য অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক বজায় রাখার যে প্রতিশ্রুতির কথা বলে আসছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে তা গুরুতরভাবে লঙ্ঘন করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডা তাইওয়ানের ডিপিপিকে নির্বাচনে জয়ের জন্য শুভকামনা জানিয়েছে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেন, শনিবারের নির্বাচনের ফলাফল ছিল তাইওয়ানের প্রাণবন্ত গণতন্ত্রের প্রমাণ।

জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োকো কামিকাওয়ার শুভকামনা জানানো বিবৃতিতে তাইওয়ানকে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ও বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। একে টোকিওর চীনা দূতাবাস অভ্যন্তরীণ বিষয়ে গুরুতর হস্তক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

এদিকে, মিত্রদের এক চীন নীতিতে সমর্থন করার আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং। শনিবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়া জাখারোভা বলেন, তাইওয়ানকে চীনের অংশ হিসেবেই দেখবে মস্কো।

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের একদল প্রতিনিধি মে মাসে তাইওয়ান সফর করতে পারেন। কিন্তু মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সফর ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বেইজিং। ওয়াশিংটনে চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউ সংবাদমাধ্যম তাসকে জানিয়েছেন, মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের তাইওয়ানে সফর এবং মার্কিন কর্তৃপক্ষ ও তাইওয়ানের মধ্যে যে কোনো আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের তীব্র বিরোধিতা করে চীন।

শেয়ার করুন