অবৈধ মজুদদারদের ব্যাপারে কঠোর হতে পিছপা হব না : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

মত ও পথ ডেস্ক

সংগৃহীত ছবি

যারা সৎভাবে ব্যবসা করবেন, তাদের সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। কিন্তু কেউ অবৈধভাবে কোনো পণ্য মজুদ করে বা ষড়যন্ত্র করে দাম বৃদ্ধির চেষ্টা করলে, তাদের ব্যাপারে কঠোর হতে আমরা পিছপা হব না।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে দেশব্যাপী এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের পরিবারের মাঝে টিসিবি পণ্য বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করে এ হুঁশিয়ারি দেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম (টিটু)।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত কয়েকদিন ধরে চালের বাজারে অস্থিরতা লক্ষ্য করছি। আমরা চালের বাজারে গিয়ে তাদের ব্যবস্থাপনা দেখব। মিল থেকে দোকান পর্যন্ত সাপ্লাই চেইনে যাতে কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকে সেটি দূর করার উদ্যোগ নেব।

তিনি আরও বলেন, আমরা মোট এক কোটি পরিবারকে স্মার্ট কার্ড দেব। ২০ লাখ স্মার্ট কার্ড আমাদের তৈরি হয়ে গেছে। সেটা আমরা ডিস্ট্রিবিউশন করছি। আগামীতে আমরা চেষ্টা করব যেন সবাইকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে পারি। আমরা আগে শুরু করেছিলাম ট্রাক দিয়ে। আমরা ট্রাক থেকে এখন দোকানে এসেছি। পরবর্তীতে এটা ন্যায্য মূল্যের দোকানের মতো দেওয়ার ব্যবস্থা করবো। যাতে কর্মজীবীরা বিকেলে নিতে পারে।

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে টিটু বলেন, উনি যে কাজ করে গেছেন, তার ফলশ্রুতিতেই এই পণ্যগুলো এখন পাওয়া যাচ্ছে। তাদের ধন্যবাদ জানাই, তারা যদি তাদের কাজগুলো সুন্দরভাবে না করতো, তাহলে আজকে আমরা এই কার্যক্রমটি শুরু করতে পারতাম না।

সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, উনি বাণিজ্য মন্ত্রণায়ের প্রস্তাবের ভিত্তিতে বুধবার ঘোষণা দিয়েছেন, ৩১ মার্চ পর্যন্ত আটটি পণ্যের এলসি মার্জিন শতভাগ লাগবে না। ব্যাংক এবং গ্রাহকের সম্পর্কের ভিত্তিতে এর মার্জিন হবে। সেই সঙ্গে তাদের আর ডলারও সংগ্রহ করতে হবে না। ব্যাংকই ডলারের ব্যবস্থা করে দেবে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি ভোক্তার নাগালের মধ্যে সব পণ্যের ব্যবস্থা করতে। আমি আশ্বস্ত করতে চাই, রমজান পর্যন্ত টিসিবির কোনো পণ্যের সরবরাহে কোনো সমস্যা হবে না। ভয়, ভীতি, জরিমানা এগুলো আমাদের উদ্দেশ্য নয়। উৎপাদন ও রপ্তানিকারকের মাধ্যমে রিটেইলারের মাধ্যমে ভোক্তার কাছে যেন সহজে সব পণ্য পৌঁছে যায়, আমাদের উদ্দেশ্য এটাই।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, টিসিবির মাধ্যমে প্রথমে আমরা তেল, চিনি ও ডাল বিক্রি শুরু করি। রমজানের সময় এর সঙ্গে ছোলা ও খেজুর যুক্ত হয়। আমাদের উপকারভোগীরা এর সঙ্গে চাল দেওয়ার দাবি জানায়। প্রধানমন্ত্রী এটি শোনার পর এই প্যাকেজের সঙ্গে চাল দেওয়ার নির্দেশনা দেন। গত বছরের জুলাই মাস থেকে আমরা ৩০ টাকা দরে পাঁচ কেজি চাল দেওয়া শুরু করি।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডে অবস্থিত কিশলয় স্কুল সংলগ্ন পার্ক মাঠে আজ নিম্ন আয়ের পরিবারের মাঝে টিসিবি পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এর আয়োজন করে টিসিবি আঞ্চলিক কার্যালয়। এতে সহযোগিতা করে টিসিবির ডিলার মেসার্স সদাই জেনারেল স্টোরের সত্ত্বাধিকারী মো. শহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের মানুষদের ১০০ টাকা দরে দুই লিটার সয়াবিন তেল, ৬০ টাকা দরে দুই কেজি মশুর ডাল, ৭০ টাকা দরে এক কেজি চিনি ও ৩০ টাকা দরে পাঁচ কেজি চাল দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ. এইচ. এম সফিকুজ্জামান, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলহাজ্ব মো. সলিম উল্লাহ (সলু) প্রমুখ।

শেয়ার করুন