বিশ্বে প্রথমবারের মতো ম্যালেরিয়ার রোগের গণ টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে ক্যামেরুনে। এই উদ্যোগের ফলে আফ্রিকাজুড়ে কয়েক লাখ শিশুর মৃত্যু ঠেকানো যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সোমবার (২২ জানুয়ারি) ইয়ান্ডুবে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক কন্যা শিশুকে টিকা দিয়ে এই কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-এর তথ্য অনুসারে, প্রতি বছর আফ্রিকায় ৬ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। এদের মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা অন্তত ৮০ শতাংশ।
ক্যামেরুন বিনামূল্যে ছয় মাস বয়সী নবজাতকদের আরটিএস,এস টিকা দিচ্ছে। এই টিকাটির মোট চারটি ডোজ নিতে হয়।
মার্কিন গবেষকদের গবেষণা অনুসারে, টিকাটি ৩৬ শতাংশ কার্যকর। এর অর্থ হলো প্রতি তিন জনের মধ্যে একজনের জীবন বাঁচাতে পারবে এই টিকা।
ইন্ড ম্যালেরিয়া কাউন্সিল কেনিয়ার উইলিস আখওয়ালে বলেন, এই টিকাদান কর্মসূচি স্বস্তি ও জীবন রক্ষাকারী এতে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু এর নিম্ন কার্যকারিতার হারের অর্থ হলো এটি কোনও অব্যর্থ প্রতিষেধক নয়।
দেশজুড়ে টিকাদান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেওয়া ক্যামেরুনের চিকিৎসক শালম নডৌলা বলেছেন, চিকিৎসাকর্মীদের ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অতিরিক্ত হাতিয়ার। ম্যালেরিয়ায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় আক্রান্ত ও মৃত্যু কমানোর সামর্থ্য আমাদের আছে। যা রোগটি নির্মূলের উদ্যোগকে ত্বরান্বিত করবে।
ব্রিটিশ ওষুধ নির্মাতা জিএসকে ৩০ বছরের গবেষণায় ম্যালেরিয়ার এই আরটিএস,এস টিকাটি উদ্ভাবন করেছে। ডব্লিউএইচও টিকাটি প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে। কেনিয়া, ঘানা ও মালাউয়িতে সফল পাইলট প্রকল্পের পর ক্যামেরুনে গণ টিকাদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
চলতি বছরে আরও অন্তত ২০টি দেশ ম্যালেরিয়ার টিকাদান কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারে বলে জানিয়েছে টিকা নিয়ে বৈশ্বিক জোট গ্যাভি। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে বুরকিনা ফাসো, লাইবেরিয়া, নাইজার ও সিয়েরা লিওন।
২০২১ সালে বিশ্বের মোট ম্যালেরিয়া আক্রান্তের ৯৫ শতাংশ এবং মৃত্যুর ৯৬ শতাংশ ছিল আফ্রিকা অঞ্চলে।