আইসিজের নির্দেশ অমান্য: একদিনে গাজায় ১৭৪ ফিলিস্তিনিকে হত্যা ইসরায়েলের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা। সংগৃহীত ছবি

গণহত্যা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের নির্দেশের পরও গত একদিনে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ১৭৪ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩১০ জন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে এই খবর দিয়েছে তুর্কিয়ের বার্তা সংস্থা আনাদোলু।

universel cardiac hospital

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনী ১৮টি গণহত্যায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর থেকে হাসপাতালে আনা হয়েছে এমন নিহত ফিলিস্তিনিদের মোট সংখ্যা ২৬ হাজার ২৫৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬৪ হাজার ৭৯৭ ফিলিস্তিনি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছে। ইসরায়েলের অবিরত বিমান ও স্থল হামলার কারণে অনেক জায়গায় অ্যাম্বুলেন্স ও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।

গাজায় গণহত্যা বন্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার মামলার প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার একটি অন্তর্বর্তী রায় দেয় আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে), যাতে ইসরায়েলকে গণহত্যা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রায়ে আদালতের প্রেসিডেন্ট মার্কিন বিচারক জে দোঙ্গু বলেন, ‘আদালত ইসরায়েলকে নির্দেশ দিচ্ছে, গাজায় গণহত্যা সংঘটিত যেন না হয় সেজন্য সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।’

রায়ে আদালত ইসরায়েলকে আরও নির্দেশ দেন, সেনারা যেন কোনো ধরনের গণহত্যা সংঘটিত না করেন সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং গণহত্যার নির্দিষ্ট (অভিযুক্ত) প্রমাণ সংরক্ষণ করতে হবে। এই রায়ের পরই ১৭৪ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরায়েলি বাহিনী।

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এদিন ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

প্রায় তিন মাস ধরে ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলায় গাজার হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে, যা গত ৭৫ বছরে ফিলিস্তিনিদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক সংঘর্ষ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

মাঝে এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতিতে ২৪ বিদেশিসহ মোট ১০৫ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ২৪০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ৭১ জন মহিলা এবং ১৬৯টি শিশু রয়েছে।

যুদ্ধবিরতি শেষে গত ১ ডিসেম্বর থেকে গাজা উপত্যকায় পুনরায় সংঘাতে জড়ায় ইসরায়েল ও হামাস।

অন্যদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২০০ জন। পাশাপাশি ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।

শেয়ার করুন