মিয়ানমারের ১৪ সীমান্তরক্ষী পালিয়ে বাংলাদেশে, বৃদ্ধ গুলিবিদ্ধ, ৫ স্কুল বন্ধ

বান্দরবান প্রতিনিধি

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মি (এএ) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সঙ্গে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ব্যাপক সংঘাত চলছে। এর মধ্যে বিজিপির ১৪ সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে এসে বিজিবির কাছে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের অস্ত্র ও গুলি বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) কাছে জমা রাখা আছে। বিজিবির ও স্থানীয় একাধিক সূত্র আজ রোববার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম-তমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী ও আরাকান আর্মি (এএ) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি চলছে। গুলি, মর্টার শেল, বিস্ফোরিত রকেট লঞ্চারের খোল বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের ঘরবাড়িতে এসে পড়ছে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। সীমান্তের ওপর থেকে আসা গুলিতে প্রবীর ধর (৬৫) নামের এক বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। তার হাতে গুলি লেগেছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিরাপত্তার স্বার্থে ৫টি বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে।

গতকাল শনিবার বিকেলে থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত লাগাতার গোলাগুলি, মর্টার শেল ও রকেট লঞ্চার বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে সীমান্তবর্তী ঘুমধুম-তমব্রুর বিস্তীর্ণ এলাকা। এ সময় তমব্রুর কোনাপাড়ায় ভুলুর বাড়িতে এসে পড়ে রকেট লঞ্চারের খোল। কোনারপাড়া, ভাজাবানিয়া, বাইশফাঁড়ি এলাকার লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমা জানান, গত রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত মিয়ানমারের ভেতরে গোলাগুলির কারণে ধুমধুম সীমান্ত এলাকার বাইশফাঁড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাজাবানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিমকুল তমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ঘুমধুম ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, আজ ভোর থেকে মিয়ানমারের সীমান্তের অভ্যন্তরে ব্যাপক গোলাগুলির কারণে ঘুমধুম-তমব্রু সীমান্তবর্তী এলাকাবাসীকে বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সীমান্তের স্কুলগুলো আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, সীমান্তের লোকজনকে সতর্ক ও নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার জন্য বলা হয়েছে। সীমান্তের পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি, পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনী সবাই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কিছু সদস্য আশ্রয় নেওয়ার ব্যাপারে শোনা যাচ্ছে।’

এদিকে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড নিরাপত্তা বাড়িয়েছে সীমান্ত এলাকায়। নিরাপত্তাচৌকিগুলোতে সদস্যসংখ্যা বাড়িয়ে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।

শেয়ার করুন