প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি, সৌদি সরকারের সহায়তায় যুবদলের ২ জন গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোর ৪টায় গুলি করা হবে। পুলিশের ক্ষমতা নেই এই হামলা ঠেকানোর, মহারণের সাক্ষী হবে ২৭ এপ্রিল’- এই হুমকি দিয়ে বার্তা পাঠানো হয়। ই-মেইলের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকিদাতাসহ তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তার কবির হোসেন সৌদি আরবে যুবদলের একাংশের সভাপতি। দ্বীন ইসলামও যুবদলের নেতা। দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্যই তারা প্রধানমন্ত্রীর ওপর হামলার হুমকি দিয়েছিলেন।

ওই ঘটনায় গত বছরের ২০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকিদাতাসহ অজ্ঞাতনামা সহযোগিদের বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় একটি মামলা করে সিটিটিসি। পরে গত ২৯ জানুয়ারি সৌদি আরব থেকে তাদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুইজন হলেন- দীন ইসলাম ও কবির হোসেন। বর্তমানে তারা পুলিশ হেফাজতে রিমান্ডে আছেন।

আজ রোববার বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।

তিনি জানান, গত বছরের ১৭ এপ্রিল বিকেল ৪টা ৫৯ মিনিটে ডিএমপির মিডিয়া পাবলিক রিলেশন সেন্টারের ই-মেইল dmpmediacell@gmail.com-এ realmec55ksa@gmail.com ই-মেইল থেকে একটি হুমকিবার্তা সম্বলিত ই-মেইল আসে। ওই ই-মেইলে হুমকি দেওয়া হয়, ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোর ৪টায় গুলি করা হবে। বাংলাদেশ পুলিশের ক্ষমতা নেই এই হামলা ঠেকানোর, মহারণের সাক্ষী হবে ২৭ এপ্রিল’ এবং ই-মেইলের বডিতে একই হুমকিবার্তা লেখা ছিল।

আসাদুজ্জামান বলেন, তৎক্ষণাৎ হুমকিবার্তার ভয়াবহতা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃংখলার স্বার্থে বিষয়টি নিয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকির বার্তামূলক ই-মেইল প্রেরণকারীকে দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য সিটিটিসি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়। সাইবার ক্রাইমের একটি চৌকস টিম গোপনীয় অনুসন্ধান এবং প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ শেষে ই-মেইল বার্তা প্রেরণকারীকে শনাক্ত করে হুমকিবার্তা প্রেরণকারী ব্যক্তির নাম-পরিচয় নিশ্চিত হয়। হুমকির বার্তা প্রদানকারীর ইন্টারনেট (আইপি) অ্যাকটিভিটি পর্যালোচনা করে তার অবস্থান সৌদি আরব বলে জানা যায়।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, হত্যার হুমকির মামলায় আসামি এবং সহযোগিদের সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এনসিবি শাখা ইন্টারপোলের মাধ্যমে এবং একইসঙ্গে ডিপ্লোমেটিক চ্যানেল ব্যবহার করে সিটিটিসি। দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর সৌদি কর্তৃপক্ষ তদন্ত শেষে গত ২৯ জানুয়ারি সৌদি আরব সরকার প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকিদাতাদের দেশে ফেরত পাঠায়। পরে সিটিটিসি তাদের হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় দীন ইসলামের কাছ থেকে হুমকি প্রদানকারী ই-মেইল অ্যাড্রেসটির রিকভারী মোবাইল নাম্বারটিসহ একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

শেয়ার করুন