রাখাইনের ম্রাউক ইউ ও কিয়াকতাও শহরে জান্তা বাহিনীর আরও দুটি ব্যাটালিয়নের সদরদপ্তর দখলে নেওয়ার দাবি করেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতীর প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
আরাকান আর্মি জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর সদরদপ্তর দখলের অভিযানের সময় ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে মিয়ানমার জান্তার অনেক সৈন্য হতাহত হয়েছেন।
ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাখাইনের ঐতিহাসিক ম্রাউক ইউ শহরে কয়েক দিনের তীব্র সংঘর্ষের পর সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালের দিকে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন (এলআইবি)-৩৭৮ এর সদরদপ্তর দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মির যোদ্ধারা।
এর আগে, গত মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) ম্রাউক ইউ শহরে জান্তা বাহিনীর এলআইবি-৫৪০ এর সদরদপ্তরের দখল ও এলআইবি-৩৭৭ ঘাঁটিতে হামলা চালায় আরাকান আর্মি।
রাখাইনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওই তিনটি ব্যাটালিয়ন ম্রাউক ইউ শহরের ঐতিহাসিক রাজধানী, ম্রাউক ইউ প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর, শহরের আবাসিক এলাকা এবং আশপাশের গ্রামগুলোতে গোলাবর্ষণ করেছে।
আরাকান আর্মি আরও জানিয়েছে, শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) তারা কিয়াকতাও শহরে এলআইবি-৩৭৬ সদর দপ্তর দখলে নিয়েছে। এছাড়া মিনবিয়া, কিয়াকতাও ও ম্রাউক ইউ শহরের অন্যান্য জান্তা ঘাঁটিগুলোতে হামলা চলমান রয়েছে।
গোষ্ঠীটি জানায়, আকাশ ও সমুদ্র থেকে জান্তা বাহিনীর বোমাবর্ষণের মধ্যেই রাথেডং, পোন্নাগিউন, রামরি ও অ্যান শহরে সংঘর্ষ চলছে। মংডু শহরের বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া টাং পিয়ো সীমান্ত ফাঁড়িতে হামলা চালিয়েছে আরাকান আর্মি। রোববার ও সোমবার প্রায় ৯০ জন জান্তা সৈন্য সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সদস্যসহ দেশটির অন্যান্য বাহিনীর মোট ২৬৪ জন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। তাছাড়া সোমবার মিয়ানমার থেকে ছোড়া কামানের গোলায় বান্দরবানে এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা পুরুষ নিহত হয়েছেন। প্রাণহানির এই ঘটনায় মিয়ানমার জান্তাকে দায়ী করেছে এএ।
গত বছরের ১৩ নভেম্বর থেকে উত্তর রাখাইন ও প্রতিবেশী দক্ষিণ চিন রাজ্যের পালেতওয়া শহরজুড়ে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে আসছে আরাকান আর্মি। গোষ্ঠীটির দাবি, তাদের যোদ্ধারা রাখাইনের রাজধানী সিত্তের কাছের পাউকতাও শহর ও পুরো পালেতওয়াসহ অন্য এলাকায় জান্তা বাহিনীর অন্তত ১৭০টি ঘাঁটি দখল করে নিয়েছেন।
সূত্র: দ্য ইরাবতী