নোয়াখালীর সুবর্ণচরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়ের পর এবার সিঁদকেটে ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ২টায় চরওয়াপদা ইউনিয়নের চরকাজী মোখলেছ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীদের পরিবার জানিয়েছে, রাতে বাড়িতে মা-মেয়েকে একা পেয়ে সিঁদকেটে একজন দরজা খুলে দেয়। পরে আরও দুইজন ঘরে ঢুকে মা (৩৪) ও মেয়ের (১২) ওপর নির্যাতন চালায়। পরে ৯৯৯-এ কল পেয়ে চরজব্বর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগী ওই নারী তিন সন্তানের জননী এবং মেয়ে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। তার স্বামী দিনমজুরের কাজ করেন। কয়েক মাস আগে হাতিয়া থেকে এসে চরকাজী মোখলেছ গ্রামে নতুন বাড়ি করে বসবাস করছিল পরিবারটি।
ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, সিঁদকেটে একজন ঘরে ঢুকে দরজা খুলে দিলে বাকি দুইজনও ঘরে ঢুকে। পরে তারা তার ও মেয়ের হাত-মুখ বেঁধে ফেলে এবং নির্যাতন চালায়। যাওয়ার সময় স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা নিয়ে যায়।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, তাদের মধ্যে দুইজনকে চেনেন এবং তারা হলেন মুন্সী মেম্বার ও গরু ব্যাপারী হারুন।
নির্যাতনের শিকার ওই নারীর স্বামী (৪২) বলেন, রাতে অন্যত্র কাজে যাওয়ায় বাড়িতে ছিলেন না। গভীর রাতে তিনজনের সংঘবদ্ধ দল সিঁদকেটে ঘরে ঢুকে স্ত্রী ও বড় মেয়েকে ধর্ষণ করে। ঘর থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় তারা মা ও মেয়ে নাকফুল-কানের দুলসহ নগদ সোয়া ১৭ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, খবর পেয়ে রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পোঁছায়। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর পর্যন্ত পুলিশ সেখানেই ছিল। সকালে ভুক্তভোগীদের থানায় আনা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা ও পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চরবাগ্গ্যা গ্রামের এক গৃহবধূকে (৪০) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয় দেশজুড়ে। সেই মামলার রায় ঘোষণা করা হয় সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি)। রায়ে সাবেক মেম্বার রুহুল আমিনসহ ১০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। এ ছাড়া মামলার আরও ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন বিচারক।