বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে আবারও বোয়িং কোম্পানির উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। একই সঙ্গে উড়োজাহাজ কেনার প্রক্রিয়া যেন একটি স্বচ্ছ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়- এই আহ্বান জানান তিনি।
৬ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। এসময় তিনি এই আহ্বান জানান।
সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, পর্যটন ও এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করবে। বাংলাদেশের পর্যটন ও এভিয়েশনকে এগিয়ে নিতে আমরা দুই দেশ আগেও একসঙ্গে কাজ করেছি। ভবিষ্যতেও একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি। যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে আমাদের এই দুইটি খাতে আরও সাহায্য করতে পারে তা আমরা তাদের কাছে জানতে চেয়েছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অতীতেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে কাজ হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মতের অমিল হলেও আমরা বন্ধুত্বের স্বার্থে সেটা আলোচনা করে সমাধান করেছি। পর্যটন ও এভিয়েশন শিল্পে আমাদের অংশীদারত্ব যাতে আরও জোরদার হয়, বিশেষ করে নিউইয়র্কে আমাদের বিমানের স্লট যেন তাড়াতাড়ি ফিরে পেতে পারি সেই বিষয়ে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
এসময় ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের পর্যটন ও এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারত্ব অতীতের মতো ভবিষ্যতেও সামনে এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কিছু প্রক্রিয়া বাকি আছে, আমরা তা দ্রুত শেষ করতে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি ও বাংলাদেশ বিমানকে সহায়তা করবো।
তিনি বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নতুন উড়োজাহাজ কেনার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি বোয়িং তার প্রস্তাব জমা দিয়েছে। আমরা চাই বোয়িং যেন এই উড়োজাহাজ কেনার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে এবং এই প্রক্রিয়াটি যেন একটি স্বচ্ছ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিমানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অবশ্যই চায় যে বাংলাদেশ বিমানে আরও বোয়িং উড়োজাহাজ যুক্ত হোক। তবে আমরা আর্থিক ও কারিগরি দিকসহ সবকিছু বিবেচনা করে যেটি ভালো হবে সেই সিদ্ধান্ত নেবো। বোয়িং বা এয়ারবাস যে কোম্পানি থেকে কিনলে বাংলাদেশের জন্য সুবিধা হবে আমরা সেখান থেকেই কিনবো।
নিউইয়র্কের সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়ে এফএএ অডিট কবে নাগাদ সম্পন্ন হতে পারে- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে ফারুক খান বলেন, বর্তমানে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষে আইকাও- এর একটি অডিট টিম কাজ করছে। তারা যাওয়ার পরে আমরা একটা সুবিধাজনক সময় এফএএ কে অডিটের জন্য আমন্ত্রণ জানাবো। তবে সেটা এ বছরই হবে।
এরপর বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার নার্দিয়া সিম্পসন মন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সে সময় অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার বর্তমানে অস্ট্রেলিয়াতে ৮০ হাজার বাংলাদেশি প্রবাসী বসবাস করেন উল্লেখ করে বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সরাসরি আকাশ যোগাযোগ স্থাপনের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
জবাবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। পর্যটন ও এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে একত্রে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বিনিয়োগকারীরা আমাদের দেশে পর্যটনের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আমরা তাদের সব ধরনের সহযোগিতা দেবো। বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সরাসরি আকাশ যোগাযোগ স্থাপনের বিষয়টিও ভেবে দেখা হবে।