অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়ার উপকূলে অভিবাসীবোঝাই নৌকা ডুবে কমপক্ষে ১৩ জন মারা গেছেন। এই ঘটনায় নিখোঁজ হয়েছেন আরও ২৭ জন।
ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে ৪০ জনেরও বেশি অভিবাসী ছিলেন এবং তারা সবাই সুদানি নাগরিক। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিউনিসিয়ার উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় অন্তত ১৩ সুদানি অভিবাসী মারা গেছে এবং আরও ২৭ জন নিখোঁজ হয়েছেন বলে তিউনিসিয়ার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নৌকায় থাকা মাত্র দুইজন বেঁচে গেছেন। নিখোঁজদের সন্ধানে তল্লাশি অভিযান চলছে।
নৌকাটি স্ফ্যাক্স শহরের কাছে অবস্থিত ছোট শহর জেবিনিয়ানা ছেড়ে যাওয়ার পর সর্বশেষ এই বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে। তিউনিসিয়ার মোনাস্তির শহরের বিচার বিভাগের মুখপাত্র ফরিদ বেন ঝা বলেছেন, ঘটনার তদন্ত চলছে।
আফ্রিকা থেকে ইউরোপে যেতে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করা অভিবাসীদের সংখ্যা সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে। এছাড়া প্রায় ১০ মাস ধরে সুদান গৃহযুদ্ধে নিমজ্জিত রয়েছে। প্রাণঘাতী এই সংঘাতের কারণে কমপক্ষে ৯০ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
বাস্তুচ্যুত এসব মানুষের বেশিরভাগই হয় দেশের নিরাপদ স্থানে অথবা প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।
জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম)-এর তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে ২ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি অভিবাসী মধ্য ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করার চেষ্টা করার সময় মারা গেছে। যা আগের বছরের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি।
এছাড়া অনিয়মিত অভিবাসন মোকাবিলায় গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) তিউনিসিয়ার সাথে একটি চুক্তিও স্বাক্ষর করে।
মূলত আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বহু মানুষ দারিদ্যের জীবন থেকে পালিয়ে ইউরোপে উন্নত জীবনের জন্য ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং এ কাজে স্ফ্যাক্সের উপকূলরেখা অভিবাসীদের কাছে প্রধান এক্সিট পয়েন্ট হয়ে উঠেছে।
জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থার মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রোজেক্টের তথ্য অনুসারে, ২০১৪ সাল থেকে ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করার চেষ্টায় ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে বা নিখোঁজ হয়েছে।
আর জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ইউএনএইচসিআর’র পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ২০২১ সালে ১ লাখ ২৩ হাজারেরও বেশি অভিবাসী ইতালিতে পৌঁছেছেন। ২০২০ সালে এই সংখ্যাটি ছিল ৯৫ হাজারের বেশি।