পাকিস্তানের পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোটের হিসাবে দ্বিতীয় স্থানে থাকা পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) চেয়ারম্যান নওয়াজ শরিফ ইতোমধ্যে সরকার গঠনের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিয়ে জোট গঠনের তৎপরতাও শুরু করেছেন তিনি। পিএমএলএন চাইছে, নতুন জোট গঠিত হলে সেই জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন নওয়াজ শরিফ।
কিন্তু ভোটের হিসাবে তৃতীয় স্থানে থাকা পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) জানিয়েছে, নতুন জোটে যেতে তেমন কোনো সমস্যা না থাকলেও নওয়াজ শরিফকে পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে আপত্তি রয়েছে দলটির। নওয়াজ প্রধানমন্ত্রী হতে চাইলে পিপিপি পিএমএল-এনের সঙ্গে জোট সরকার গঠন নাও করতে পারে বলে জানা গেছে। খবর পাকিস্তান টুডের।
পিপিপির শীর্ষ মুখপাত্র খুরশিদ শাহ সংবাদমাধ্যম পাকিস্তান টুডেকে বলেন, নওয়াজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী হতে চান। এজন্যই জোট গঠনের তৎপরতা চালাচ্ছেন…. জোট সরকারের অংশ হতে আমাদের আপত্তি নেই, কিন্তু আমরা তাকে (নওয়াজ) প্রধানমন্ত্রীর পদে দেখতে চাই না। আমরা চাই, পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন আমাদের দলের চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি।
পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির নির্বাচন হয়েছে গত ৮ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার। অ্যাসেম্বলির মোট আসনসংখ্যা ২৬৬টি। এসব আসনের মধ্যে একটি ব্যতীত বাকি সবগুলোতে নির্বাচনী ভোটগ্রহণ হয়েছে বৃহস্পতিবার।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল শুক্রবার রাত পর্যন্ত ২৫০টি আসনের ফলাফল জানা গেছে। সেখানে দেখা গেছে, ৯৯টি আসনে জয়ী হয়েছেন ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই), ৭১টি আসন পেয়েছে নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৩টি আসন।
এদিকে গতকাল শুক্রবার রাতে লাহোরে নিজ বাসবভবনের সামনে জড়ো হওয়া কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে পিএমএলএনকে বিজয়ী বলে দাবি করেন নওয়াজ শরিফ। তিনি আরও বলেন, আমি শেহবাজ শরিফকে (নওয়াজের ছোট ভাই এবং পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী), ফজলুর রহমান (চেয়ারম্যান-জামায়াতে উলামায়ে ইসলাম-ফজলুর), খালিদ মকবুল সিদ্দিকী (চেয়ারম্যান-মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট) এবং আসিফ আলি জারদারির (কোচেয়ারম্যান- পাকিস্তান পিপলস পার্টি) সঙ্গে আগামীকাল (শনিবার) থেকে আলোচনা শুরু করতে বলেছি।
জিও নিউজকে এ প্রসঙ্গে খুরশীদ শাহ বলেন, এখনও তো সব আসনের ফলাফল আসেনি। তার (নওয়াজ) এত ব্যস্ততা কেন আর কীসের ভিত্তিতে তিনি নিজেকে জয়ী ঘোষণা করছেন?…. যাই হোক, আমরা আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেব। প্রসঙ্গত, ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পার্লামেন্টের প্রধান বিরোধী নেতা ছিলেন খুরশিদ শাহ। সে সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন নওয়াজ শরিফ।