প্রায় ৬০ বছর পর বাংলাদেশ-ভারত নৌ প্রটোকলে চালু হলো রাজশাহী-মুর্শিদাবাদ নৌপথ। গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ থেকে মুর্শিদাবাদের মায়া নৌপথে আনুষ্ঠানিকভাবে নৌযান চলাচল শুরু হয় সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা সোয়া ১১টায়।
প্রথম দিন সাড়ে ১১ টন গার্মেন্টস ঝুট এ পথে বাংলাদেশ থেকে ভারত পাঠানো হয়।
বেলা ১১টায় সুলতানগঞ্জ-মায়া নৌপথে পণ্যবাহী নৌযান চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা, আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন এবং রাজশাহীতে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাইকমিশনার মনোজ কুমারসহ রাজশাহীর স্থানীয় সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগপর্যন্ত সুলতানগঞ্জ-মায়া ও গোদাগাড়ী-ভারতের লালগোলা নৌঘাটের মধ্যে নৌপথে বাণিজ্য চালু ছিল। পরে রুটটি বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পরে রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ ঘাটটি নদীবন্দরের মর্যাদা পেল।
সুলতানগঞ্জ নৌবন্দরের মাধ্যমে ভারত থেকে পণ্য আমদানিতে সময় ও খরচ কমে যাবে। এতে উপকৃত হবেন বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের ব্যবসায়ীরা। তারা আশা করছেন, বছরে এ নৌপথে দুই দেশের মধ্যে হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হবে।
এর আগে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভায় বাংলাদেশের রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ আর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ধুলিয়ান নৌরুটে বাণিজ্য চালুর সিদ্ধান্ত হয়। ৭৮ কিলোমিটারের একটি নৌপথের অনুমোদন থাকলেও পদ্মার নাব্যতা সংকটের কারণে তা কার্যকর করা যায়নি। ফলে রুটটি সংক্ষিপ্ত করে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ থেকে ভারতের মুর্শিদাবাদের মায়া নৌবন্দর পর্যন্ত আড়াআড়িভাবে ২০ কিলোমিটার পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়ার পরিকল্পনা হয়। শুরুতে এ নৌপথে ভারত থেকে পাথর বালি ও বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সামগ্রী আনা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সুলতানগঞ্জ থেকে মায়া নৌঘাটের নদীপথে দূরত্ব মাত্র ১৭ কিলোমিটার। সুলতানগঞ্জ নৌঘাটটি রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়ক থেকে এক কিলোমিটার দক্ষিণে পদ্মার শাখা নদী মহানন্দার মোহনার কাছাকাছি। সারা বছর সুলতানগঞ্জের এ পয়েন্টে গভীর পানি থাকে।
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গের মায়া নৌঘাটটি মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর মহকুমা শহরের কাছে ভারতীয় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে যুক্ত। ফলে সুলতানগঞ্জ-মায়া পথে নৌবাণিজ্য শুরু হওয়ায় পরিবহন খরচ অনেকাংশে কমে যাবে। এতে রাজশাহীর অর্থনীতি গতিশীল হবে এবং ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।