পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে জালিয়াতি করা হয়েছে, শুধু জালিয়াতি না, ভোট কেন্দ্রে কারচুপি ও ফলাফল পাল্টে দেওয়ার মতো অভিযোগ উঠেছে দেশটিতে। এসব অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
তদন্তের আহ্বানের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর পাকিস্তানের পরিস্থিতির দিকে সামনের দিনগুলোয় নজর রাখবে বলেও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর জিও নিউজের।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৮ ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের সময় অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত করার জন্য পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশে অনেক বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে, যেটি নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করে।
সোমবার দৈনিক প্রেস ব্রিফিংয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার পাকিস্তানের নির্বাচনের ব্যাপারে কথা বলেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানে আইনি ব্যবস্থা নিজেই কার্যকর হবে। এটাই সঠিক ও প্রথম পদক্ষেপ হবে বলে আমরা মনে করি। পাকিস্তান কর্তৃপক্ষকে এ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ও ব্যক্তিগতভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইইউ, যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশও এ ব্যাপারে সহমত জানিয়েছে। কিছু অনিয়ম এ নির্বাচনে হয়েছে। আমরা পাকিস্তান সরকারকে নির্বাচনের রায়কে সম্মান করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে জানিয়েছি।
মার্কিন আইন প্রণেতারা পাকিস্তানের ‘নির্বাচনী জালিয়াতির’ অভিযোগটি সম্পর্কে স্বাধীন তদন্ত চেয়ে বাইডেন প্রশাসনকে চাপ দিতে বলছেন। এ বিষয়ে ম্যাথিউ মিলারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি জানি না, স্বাধীন তদন্ত করার জন্য তারা কোন সংস্থার প্রস্তাব করছে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে দেখা গেলে আমরা খুশি হবো।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পাকিস্তানের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ ও জালিয়াতির বিষয়ে যে অভিযোগগুলো উঠেছে সেগুলো দেশটির আইনি ব্যবস্থার অধীনে সম্পূর্ণরূপে তদন্ত করার আহ্বান জানাই আমরা। দিনগুলোতেও আমরা এ পর্যবেক্ষণ করা চালিয়ে যাব। আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সম্মান করি এবং পাকিস্তানের সরকার গঠনের পর তাদের সঙ্গে আমরা কাজ করে যাব।
উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই), জামায়াতে ইসলামী ও জামিয়াত উলেমা-ই-ইসলামসহ (জেইউআই-এফ) বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ করেছে। আবার পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি), পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তান (এমকিউএম-পি) জোট সরকার গঠনের জন্য আলোচনা করছে।
পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ছাড়া দলীয়ভাবে কোনো দল জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। এ অবস্থায় দেশটিতে সরকার গঠনে বিলম্ব হচ্ছে। এরমধ্যেই পিটিআই, জামায়াতে ইসলামী ও জেইউআই-এফ’সহ দলগুলোর অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত চাইলো যুক্তরাষ্ট্র।