শিগগিরই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে, আশা প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংগৃহীত ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতির দেশগুলোতে ২০২৪ সালে মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে আসবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। এমন অবস্থায় বিশ্ববাজারে জ্বালানি, খাদ্যপণ্য ও সারের মূল্য কমে আসা, দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় এবং খাদ্য সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকারি উদ্যোগের প্রভাবে শিগগিরই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে আশা করা যায়।

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।

অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকার কী কী পদক্ষেপ নেওয়ার চিন্তা করছে, তা জানতে চান মুজিবুল হক। জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত ও যুদ্ধকেন্দ্রিক নিষেধাজ্ঞার ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে, তার কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিভিন্ন সংকট অনুভূত হচ্ছে। এর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েছে মূল্যস্ফীতি, ভর্তুকি ব্যয়, লেনদেনের ভারসাম্য, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং মুদ্রা বিনিময় হারের ওপর। তবে মূল্যস্ফীতি, নিত্যপণ্যের বাজার, আমদানি পণ্যের আমদানি নিরবচ্ছিন্ন রাখা, তৈরি পোশাক রপ্তানি, বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনা, ব্যাংক তারল্য, টাকা পাচার রোধ, গ্যাস সরবরাহ, টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সরকার অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছে।

এসব খাতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা বিস্তারিত তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতিতে নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে অবস্থান বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।

অর্থ পাচার রোধে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য, সাক্ষ্য-প্রমাণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা নিতে প্রাথমিকভাবে ১০টি দেশের সঙ্গে আইনগত সহায়তা চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ববাজারের কয়েকটি পণ্য যেমন জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেল, গম, সারসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য, ভোগ্যপণ্য ও শিল্পের কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ অনুভূত হচ্ছে। সরকার বর্তমানে ভোগ্যপণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সকল প্রকার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এসব উদ্যোগের বিস্তারিত তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উদ্যোগগুলোর কার্যকর প্রভাব অল্প সময়ের মধ্যেই পাওয়া যাবে। রপ্তানি ও প্রবাসী আয় সূত্রে প্রাপ্ত আয় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। জনসাধারণের জীবনযাত্রাকে সহজ করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে এবং এর ফলে চলমান সাময়িক সংকট কেটে জনমনে স্বস্তি ফিরে আসবে।

শেয়ার করুন