রাশিয়া ক্যান্সারের ভ্যাকসিন তৈরির দ্বারপ্রান্তে বলে মন্তব্য করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একইসঙ্গে এই ভ্যাকসিন শিগগিরই রোগীরা পেতে পারেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ান বিজ্ঞানীরা ক্যান্সারের ভ্যাকসিন তৈরির কাছাকাছি রয়েছেন এবং এটি শিগগিরই রোগীদের জন্য সহজলভ্য হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।
বুধবার তিনি বলেছেন, ‘আমরা নতুন প্রজন্মের তথাকথিত ক্যান্সার ভ্যাকসিন এবং ইমিউনোমোডুলেটরি ওষুধ তৈরির খুব কাছাকাছি চলে এসেছি’।
ভবিষ্যতের প্রযুক্তির ওপর আয়োজিত মস্কো ফোরামে বক্তৃতা দেওয়ার সময় রাশিয়ার এই প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমি আশা করি, শিগগিরই এই টিকা কার্যকরভাবে রোগীদের চিকিৎসা থেরাপির পদ্ধতি হিসাবে ব্যবহার করা হবে।’
অবশ্য প্রস্তাবিত ভ্যাকসিনগুলো ঠিক কোন ধরনের ক্যান্সারকে লক্ষ্য করে চিকিৎসার কাজ করবে বা কীভাবে সেটি হবে তা নির্দিষ্ট করেননি পুতিন।
রয়টার্স বলছে, বিশ্বের অনেক দেশ ও কোম্পানি ক্যান্সারের ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে। গত বছর যুক্তরাজ্য সরকার ‘ব্যক্তিগত ক্যান্সার চিকিৎসা’ প্রদান করতে ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালু করার জন্য জার্মান-ভিত্তিক বায়োএনটেকের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। দেশটি এই কাজে ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ হাজার রোগীর কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
এছাড়া ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি মডার্না এবং মেরর্ক অ্যান্ড কোম্পানিও একটি পরীক্ষামূলক ক্যান্সারের ভ্যাকসিন তৈরি করছে। এই টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে মধ্য-পর্যায়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, মেলানোমায় আক্রান্ত রোগীদের তিন বছরের চিকিৎসার পর ফের এই রোগের পুনরাবৃত্তি বা মৃত্যুর সম্ভাবনা অর্ধেক কমে গেছে। মূলত মেলানোমা হচ্ছে সবচেয়ে মারাত্মক ত্বকের ক্যান্সার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি)-এর বিরুদ্ধে বর্তমানে ছয়টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত ভ্যাকসিন রয়েছে। এইচপিভি জরায়ুমুখের ক্যান্সারসহ অনেক ধরনের ক্যান্সার সৃষ্টি করে। সেইসাথে হেপাটাইটিস বি (এইচবিভি)-এর বিরুদ্ধেও ভ্যাকসিন রয়েছে যা লিভার ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে।
উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাস মহামারি চলাকালীন রাশিয়া কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে নিজস্ব স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন তৈরি করেছে এবং বেশ কয়েকটি দেশে সেটি বিক্রিও করে। যদিও দেশীয়ভাবে এই টিকা নেওয়ার বিরুদ্ধে জনসাধারণের অনিচ্ছা ছিল অনেক বেশি।