বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এখনো ভার বহনসহ নানা কাজের জন্য গাধার ব্যবহার আছে। বিশেষ করে আফ্রিকার দেশগুলোতে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরেই আফ্রিকা তো বটেই বিশ্বের অনেক দেশেই গাধা চুরি ও হত্যার হার বেড়ে গেছে। উদ্দেশ্য একটাই—মানুষের জন্য বিভিন্ন ওষুধ বা চিকিৎসা সামগ্রীসহ নানা পণ্য তৈরি।
গাধার চামড়া থেকে যে ওষুধ তৈরি করা যায়, তার সূত্রপাত গাধাবহুল মহাদেশ আফ্রিকায় নয়। বরং সেখান থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরের চীনে। মূলত চীনে গাধার চামড়া থেকে এক বিশেষ ধরনের জেলাটিন নিষ্কাশন করা হয় যেটিকে এজিয়াও নামে ডাকা নয়। ধারণা করা হয়, এই জেলাটিন মানুষের যৌবন বা তারুণ্য ধরে রাখে, ত্বক সুস্থ-সুন্দর রাখে। চীনে এই বিষয়টির প্রচলন বহু পুরোনো। খবর বিবিসির।
সাধারণত, গাধাকে হত্যার পর সেটির চামড়া ছাড়িয়ে নিয়ে ফুটন্ত পানিতে সেদ্ধ করা হয় এবং এক বিশেষ পদ্ধতিতে জেলাটিন নিষ্কাশন করা হয়। পরে নিষ্কাশিত তরল জেলাটিনকে গুঁড়া বা পাউডারে পরিণত করা হয়। এরপর সেগুলোকে বিভিন্ন পিল বা তরল আকারে বিভিন্ন খাদ্যের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া হয়।
গাধা সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা অলাভজনক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ডানকি স্যাংকচুয়ারির হিসাব অনুসারে, ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিশ্বে প্রতিবছর গড়ে মোট ৫৯ লাখ গাধা হত্যা করা হয়েছে। সংগঠনটির দাবি, প্রতিবছর জেলাটিনের জন্য গাধার চামড়ার চাহিদা বেড়েই চলেছে।
বর্তমান বিশ্বে প্রায় ৫ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি গাধা আছে বলে অনুমান করা হয়। এর দুই-তৃতীয়াংশই আফ্রিকার দেশগুলোতে। মহাদেশটির কিছু দেশে গাধা শিকার বৈধ এবং কিছু দেশে অবৈধ। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে গাধার চামড়ার চাহিদা বেশি থাকায় মহাদেশটিতে অবৈধভাবে গাধা শিকার বেড়েই চলেছে।