গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, দেশে এখন একটি গোষ্ঠী আছে, যারা নানানরকমের প্রপাগাণ্ডা ছড়ানোতে লিপ্ত, একই গোষ্ঠী এই কাজটি স্বাধীনতার আগেও করেছে। স্বাধীনতার আগে তারা পাকিস্তানের পক্ষে কথা বলেছে, এখন তারা নিজের অজান্তেই পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করে। পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করা কী? সেটি হলো পাকিস্তানের যে আদর্শ, ভাবনা সেটিকে অনুসরণ করা। ঐ গোষ্ঠীটি সবসময় চায় এদেশে স্বৈরতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে, এজন্য তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে সহিংসতার পথকে বেছে নিয়ে প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, জনগণ বিএনপির ডাকে এখন আর সাড়া দেয় না, কেননা তারা জনগণের পাশে থাকে না। আমরা সবসময় জনগণের কাছাকাছি থাকি, জনগণের সুখ-দুঃখ বিবেচনা করে কাজ করি।
১৮ ফেব্রুয়ারি (রোববার) বিকেলে রাজশাহী সার্কিট হাউজে সিটি করপোরেশনের মেয়র, স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আমি সবসময় চাই বিরোধী দল শক্তিশালী হোক, কিন্তু কোন বিরোধী দল? যে বিরোধী দল মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করে, যে বিরোধী দল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে মানে, সেই দলটিই বিরোধী দল হিসেবে কাজ করুক-এটা চাই। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কিংবা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কোনো মানুষ বিরোধী দলের নেতৃত্ব দিক-এটা আমি চাই না। মির্জা ফখরুল ইসলাম বিরোধী দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, এখানেই তো আপত্তি। কেননা মির্জা ফখরুল ইসলামের বাবা, তার উত্তরাধিকার সবটাই মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে এবং পাকিস্তানের পক্ষে।
তিনি বলেন, আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নাই। নির্বাচনের আগে এমন একটি ভাব ছিল- এই বোধহয় সারা দুনিয়া উৎখাত হয়ে যাবে, এই বোধহয় সারা দুনিয়ার সরকারগুলো আমাদের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। জার্মানির মিউনিখ সম্মেলনে দেখন পৃথিবীর বড় বড় রাষ্ট্রের প্রধানেরা কীভাবে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্বাসেডর কিছুদিন আগেও ওবায়দুল কাদের সাহেবের সঙ্গে দেখা করে গিয়েছেন, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন।
বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ আরও বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া কেউ বিজয়ী হয়ে আসতে পারেনি। আমি যে আসন থেকে নির্বাচন করেছি, সেখানে আমি বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হলেও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে, তাকে তো হাতেপায়ে ধরে আনা যাবে না। তবে নির্বাচনে না এসে তারা দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল, কিন্তু জনগণ তাদের এই ষড়যন্ত্রকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে।
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সমালোচনা করে মোকতাদির চৌধুরী বলেন, তার ঠোঁটের মধ্যে বাংলাদেশ শব্দটাই নাই, সারাক্ষণ শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দিচ্ছে! এসব বলতে বলতে তো ১৫ বছর চলে গেছে, আরও ১৫ বছর চলে যাবে কিন্তু ক্ষমতায় আসতে পারবে না। কারণ জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নাই।
তিনি বলেন, জনগণ যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের শক্তি আছে। ততক্ষণ পর্যন্ত জননেত্রী শেখ হাসিনার শক্তি আছে। কাজেই দলের ভিতরে অনৈক্য যত কম থাকবে তত বেশি আমরা শক্তিশালী থাকবো। নেত্রীর হাতকে শক্তিশালী রাখতে হবে। এজন্য দলীয় কর্মকাণ্ডগুলো অব্যাহত রাখবেন।
এসময় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।