ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হাতে জিম্মি থাকা লোকজনকে মুক্তি দেওয়ার সময় বেঁধে দিয়েছে ইসরায়েল। আগামী ১০ মার্চের মধ্যে সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। ইসরায়েলের যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গান্তজ হুঁশিয়ারি দিয়েছে বলেছেন, হামাস যদি এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গাজায় আটক সব জিম্মিকে মুক্তি না দেয় তবে রাফায় তীব্র আক্রমণ চালানো হবে।
গাজার জনাকীর্ণ দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরে কবে সৈন্যরা প্রবেশ করতে পারে সে বিষয়ে প্রথম বারের মতো পরিষ্কার তথ্য দিলো ইসরায়েল। রাফায় এ ধরনের হামলার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী সমালোচনা শুরু হয়েছে। শহরটিতে বর্তমানে ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছে।
এর আগে জাতিসংঘের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে যে, ইসরায়েলি অভিযানের পর গাজার একটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ণ করতে রাফা শহরের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে তাদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, হামাসের হাতে জিম্মিদের কোথায় রাখা হয়েছে সে বিষয়ে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। নাসের হাসপাতালে তাদের অভিযানকে সুনির্দিষ্ট এবং সীমিত হিসাবে বর্ণনা করেছে আইডিএফ। ইসরায়েলের দাবি ওই হাসপাতালকে সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহার করছে হামাস।
ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী গান্তজ রোববার এক বিবৃতিতে বলেন, বিশ্বকে অবশ্যই জানতে হবে এবং হামাস নেতাদের অবশ্যই জানা উচিত যে, যদি রমজানের মধ্যে আমাদের জিম্মিরা বাড়ি ফিরতে না পারে তবে রাফাসহ সর্বত্র তীব্র লড়াই চলবে।
চলতি বছরের ১০ মার্চ গাজায় রমজান শুরু হচ্ছে। ইসরায়েলের যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রিসভা দেশটির শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। এতে কমপক্ষে ১২০০ জন নিহত এবং ২৫৩ জনকে জিম্মি হিসেবে অপহরণ করা হয়। হামাসের হাতে এখনও প্রায় ১৩০ জন জিম্মি বন্দি রয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
এদিকে হামাসের শীর্ষ মুখপাত্র ওসামা হামদান দাবি করেছেন যে, গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা নিয়ে এখনও ‘গেম খেলছেন’ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে মতানৈক্যের মূল কারণ হচ্ছেন নেতানিয়াহু এবং তিনি ‘গেম খেলছেন’। গাজায় কোনো ব্যবস্থা বা চুক্তি না করার চেষ্টা করছেন নেতানিয়াহু এবং এটা পরিষ্কার।
এর আগে জাতিসংঘ জানিয়েছে, রাফায় ইসরায়েলি স্থল আগ্রাসনের ভয়ে ফিলিস্তিনিরা দেইর আল-বালাহ শরণার্থী শিবিরসহ মধ্য গাজার বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের বেশ কয়েকজন কর্মীকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে।