ভারতের পার্লামেন্ট লোকসভার নির্বাচন হবে আগামী এপ্রিল মাসে। সেই নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের আসন ভাগাভাগি নিয়ে জোটসঙ্গী কংগ্রেসের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে রাজ্যটিতে ক্ষমতাসীন দল অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে লোকসভার মোট সংসদীয় আসন রয়েছে ৪২টি। ভারতের বিজেপিবিরোধী নির্বাচনী জোট ‘ইনডিয়া’র অন্যতম সদস্য তৃণমূলের হাইকমান্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী নির্বাচনে কংগ্রেস বা জোটের কোনো সঙ্গী দলকে এই ৪২টি আসনের কোনোটিতে ছাড় দেওয়া হবে না। তৃণমূল কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা ও ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার সদস্য ডেরেক ও’ব্রায়েন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে ডেরেক বলেন, ‘কিছুদিন আগে তৃণমূল চেয়ারপারসন এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন যে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি সংসদীয় আসনে তৃণমূল একাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এছাড়া আসামের কয়েকটি আসন এবং মেঘালয়ের তুরায় একটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তৃণমূল। এখন পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন আসেনি।’
প্রসঙ্গত, পার্লামেন্ট নির্বাচন এগিয়ে আসায় ইনডিয়ার জোটসঙ্গীদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির আলোচনা শুরু করেছে জোটের বৃহত্তম দল কংগ্রেস। উত্তরপ্রদেশের রাজ্য সরকারে প্রধান বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টি এবং পাঞ্জাব রাজ্য সরকারে ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টির সঙ্গে এ ইস্যুতে নিষ্পত্তিতেও পৌঁছেছে কংগ্রেস।
এরই ধারাবাহিকতায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ৫টি আসন চেয়েছিল কংগ্রেস। তার পরিবর্তে আসামে দুটি আসন ও মেঘালয়ে একটি আসন তৃণমূলকে প্রস্তাব করা হয়েছিল।
তবে কংগ্রেসের এই প্রস্তাব নাকচ করে পশ্চিমবঙ্গে দলটিকে ২টি আসন ছাড় দেওয়ার পাল্টা প্রস্তাব দেয় তৃণমূল। তবে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে কংগ্রেস। তারপরই তৃণমূল রাজ্যের কোনো আসনে আর ছাড় না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
তৃণমূলের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগে এক দলীয় কর্মসূচিতে বলেছিলেন, ‘আমি কংগ্রেসকে বলেছিলাম যে বিধানসভায় (পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের আইনসভা) আপনাদের কোনো প্রতিনিধি নেই। রাজ্যের দুটি এমপি আসন আমি আপনাদের ছেড়ে দেবো এবং সেসব আসনে আপনারা জিতবেন— এই নিশ্চয়তাও আমি দিচ্ছি।’
‘কিন্তু কিন্তু কংগ্রেস তা প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আগামী নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের সব আসনে তৃণমূল একাই লড়বে। কোনো আসনে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
শনিবার ডেরেক ও’ব্রায়েন মূলত তৃণমূল সভানেত্রীর সেই বক্তব্যই ফের ব্যক্ত করলেন।
সূত্র : এনডিটিভি