মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের লেখা চিঠির জবাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসসি) দক্ষিণ এশিয়ার জেষ্ঠ পরিচালক আইলিন লাউবাচারের কাছে চিঠির একটি অনুলিপি হস্তান্তর করেন।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান চিঠির মূল কপি হোয়াইট হাউসের কাছে হস্তান্তর করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় চান। ‘আমরা তাদের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চাই’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে দেশগুলো উপকৃত হবে।
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠকে আন্তঃসংস্থা মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পরিচালক আইলিন লাউবাচার।
ইউএসএআইডির এশিয়া বিষয়ক সহকারী প্রশাসক মাইকেল শিফার, পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আখতার এবং ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের সিডিএ হেলেন লাফাভে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অঞ্চলের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলমসহ মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও গভীর করার জন্য নতুন পথ অন্বেষণকে কেন্দ্র করে আলোচনা হয়। বৈঠকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তা, জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি খাতের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তির পক্ষে এবং যেকোনো ধরনের যুদ্ধের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি অর্জনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে তার সুবিধা ব্যবহার করার আহ্বান জানান।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন ড. হাছান মাহমুদ।
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রত্যর্পণের বিষয়েও আলোচনা হয়।
একই সঙ্গে র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দেন। তিনি একটি মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদার হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারত্বের পরবর্তী অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাওয়া বিষয়ে চিঠিতে বাইডেন বলেছেন, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, মানবিক সহায়তা বিশেষ করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য একসঙ্গে কাজ অব্যাহত রাখতে তার প্রশাসনের আন্তরিক আকাঙ্ক্ষার কথা তিনি জানাতে চান।
প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘সমস্যা সমাধানে আমাদের একসঙ্গে কাজ করার দীর্ঘ ও সফল ইতিহাস রয়েছে এবং আমাদের শক্তিশালী মানুষে মানুষে বন্ধনই এই সম্পর্কের ভিত্তি।’