কারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে সরকারের তা জানা উল্লেখ করে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, অন্য দলকে এ ব্যাপারে দোষ দিয়ে লাভ নেই। এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা। বাজার সিন্ডিকেট না ভাঙার কোনো কারণ নেই। নিজের (ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ) মানুষের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে রাশেদ খান মেনন এসব কথা বলেন।
দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সমালোচনা করে মেনন বলেন, অধ্যাপক রেহমান সোবহান ঠিকই বলেছেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে মুষ্টিমেয় লোক ধনসম্পদের অধিকারী হয়েছেন। ঋণখেলাপি বর্তমানে ‘বিজনেস মডেলে’ রূপান্তরিত হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অর্থ পাচার। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। দুর্বৃত্তায়িত এই অর্থনীতি বিস্তৃত হয়েছে রাজনীতির ক্ষেত্রে। ক্ষুদ্র ধনিকগোষ্ঠী, সামরিক-বেসামরিক আমলাদের বৃত্তে বন্দী অর্থনীতি-রাজনীতি। একে এক কথায় অলিগার্কি (গোষ্ঠীতন্ত্র) হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। এই অলিগার্কিই দেশের অর্থনীতি-রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। রাজনীতি-নির্বাচন এসবই ক্রমে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি মেনন বলেন, এ কথা সত্য যে নির্বাচন সম্পর্কে জনমানুষের অনাস্থাবোধ দূর করা যায়নি। কালোটাকার প্রভাব, বিশেষ সংস্থার নিয়ন্ত্রণ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের অসহায়ত্ব, শহরাঞ্চলগুলোতে ভোটারদের নগণ্য উপস্থিতি নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষুণ্ন করেছে। কিন্তু তা কোনোক্রমেই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে না।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত ছিল, উল্লেখ করে মেনন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের নামে ভিসা নীতি, শ্রমিক অধিকার নীতি প্রয়োগের হুমকি দিয়ে আসছিল। বিএনপি-জামায়াত সরকার পতনের আন্দোলনের নামে সব ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি করার প্রয়াস নিয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও জনগণের প্রতিরোধ সব ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিয়েছিল। আগুন সন্ত্রাস, ট্রেনে মানুষ পুড়িয়ে মারা, রেললাইন উপড়ে ফেলা—নানা জটিল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এই নির্বাচন হয়েছে। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র এবং অসাংবিধানিক ধারার বিরুদ্ধে বিশেষভাবে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে এই নির্বাচন একটি রাজনৈতিক বিজয়।