ছয় মাসের জন্য পেট্রল রপ্তানি বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। আগামী সপ্তাহ থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
পেট্রলের স্থানীয় চাহিদা বাড়তে থাকায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন এ প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন।
১ মার্চ রাশিয়া থেকে পেট্রল রপ্তানি বন্ধ হওয়ার কথা রয়েছে। সরবরাহে ঘাটতি এড়ানো ও স্থানীয় বাজারে দাম বেড়ে যওয়ার কারণে গত বছরেও একই রকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল বলে আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে।
রাশিয়ার গণমাধ্যম আরবিসি জানিয়েছে, পেট্রল রপ্তানি বন্ধের এ প্রস্তাব করেন উপপ্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার নোভাক। ২১ ফেব্রুয়ারি একটি চিঠিতে তিনি জানান, মৌসুমের কারণে শিগগিরই স্থানীয় বাজারে তেলের চাহিদা বাড়বে।
তিনি বলেন, বাজার স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
পেট্রল রপ্তানি বন্ধের এ সিদ্ধান্ত ইউরাশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়নের (ইএইইউ) সদস্য দেশগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। এসব দেশ হলো আর্মেনিয়া, বেলারুশ, কাজাখস্তান ও কিরগিজস্তান। এ ছাড়া মঙ্গোলিয়া, উজবেকিস্তান এবং জর্জিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া আবখাজিয়া ও সাউথ ওসেটিয়ার ক্ষেত্রেও এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
গত সেপ্টেম্বরে জ্বালানি তেল রপ্তানি বন্ধ করেছিল রাশিয়া। শীত আসার আগে ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। সে সময় চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তেলের দাম বাড়ে এবং বাজারে ঘাটতি দেখা গিয়েছিল। ওই সময়ে বেলারুশ, কাজাখস্তান, আর্মেনিয়া ও কিরগিজস্তানকে এর আওতার বাইরে রাখা হয়েছিল। তবে বেশির ভাগ বিধিনিষেধ নভেম্বরে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
সর্বশেষ দফার নিষেধাজ্ঞা আরো বেশি সময়ের জন্য হচ্ছে। এমন ধারণা পাওয়া গেছে যে মার্চের ১৫ থেকে ১৭ তারিখে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ক্রেমলিন তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করছে।
পেট্রল রপ্তানি বন্ধ করার কারণে তেল শোধনাগারগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য সময় বের করা যাবে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এসব শোধনাগারের অনেকগুলো হামলার শিকার হয়েছিল। জ্বালানি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে রাশিয়া কমনওয়েলথ অব ইনডিপেনডেন্ট কান্ট্রিজের সদস্য নয়, এমন দেশগুলোতে গত মাসে পেট্রল রপ্তানি কমিয়ে দিয়েছিল।
২০২৩ সালে রাশিয়া ৪ কোটি ৩৯ লাখ টন পেট্রল উৎপাদন করেছিল। এর মধ্যে রপ্তানি হয়েছিল ৫৭ লাখ ৬০ হাজার টন পেট্রল। রাশিয়ার পেট্রল সবচেয়ে বেশি আমদানি করে আফ্রিকার কিছু দেশ; যার মধ্যে রয়েছে নাইজেরিয়া, লিবিয়া, তিউনিসিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
তেলের দাম বাড়ানোর চেষ্টা হিসেবে ওপেক গোষ্ঠী ও সহযোগী দেশগুলো উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। এ চেষ্টার অংশ হিসেবে রাশিয়া এখন স্বেচ্ছায় প্রতিদিন পাঁচ লাখ ব্যারেল তেল ও জ্বালানি কম রপ্তানি করছে।