যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের একজন বিচারক রায় দিয়েছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিদ্রোহের সাথে জড়িত। একইসঙ্গে ট্রাম্পকে অঙ্গরাজ্যটির প্রাথমিক ব্যালট থেকে নিষিদ্ধও করেছেন তিনি।
যদিও এ বিষয়ে একটি আপিল মুলতুবি থাকায় রায়টিকে স্থগিত রেখেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
অবশ্য এবারই প্রথম নয়, এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য দুটি অঙ্গরাজ্য কলোরাডো এবং মেইন সংবিধানের ১৪ তম সংশোধনী ‘বিদ্রোহ’ ধারা লঙ্ঘনের জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তাদের প্রাথমিক ব্যালট থেকে সরিয়ে দেয়।
তবে বিষয়ে চূড়ান্ত ফলাফল সম্ভবত মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তেই আসবে। আর ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের প্রাথমিক নির্বাচন আগামী ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে।
অবশ্য ইতোমধ্যেই প্রাইমারিতে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। রিপাবলিকানদের মধ্যে মনোনয়ন দৌড়ে সবার চেয়ে এগিয়ে থাকা প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্প কমপক্ষে শুক্রবার পর্যন্ত ব্যালটে থাকবেন এবং এসময় তিনি আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার সময় পাবেন।
বিবিসি বলছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল দাঙ্গায় তার ভূমিকার কারণে মার্কিন সংবিধানের ১৪ তম সংশোধনী লঙ্ঘন করেছেন বলে ভোটারদের যারা যুক্তি দিয়েছিলেন কুক কাউন্টি সার্কিট বিচারক ট্রেসি পোর্টার তাদের সাথে একমত হয়েছেন।
এর আগে কলোরাডোর সুপ্রিম কোর্ট গত বছরের ডিসেম্বরে ট্রাম্পকে রিপাবলিকান প্রাথমিক ব্যালটে নিষিদ্ধ করার পরে ২০২১ সালের ক্যাপিটল দাঙ্গার সময় ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডকে বিদ্রোহ বলে যুক্তি দিয়েছিল।
আর নিজের দেওয়া রায়ে বিচারক পোর্টার কলোরাডোর যুক্তিকে ‘আবশ্যক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইলিনয় স্টেট বোর্ড অব ইলেকশন আগামী ১৯ মার্চের সাধারণ প্রাথমিক নির্বাচনের ব্যালট থেকে ডোনাল্ড জে. ট্রাম্পকে সরিয়ে দেবে।’
অবশ্য ট্রাম্পের একজন মুখপাত্র এই রায়কে ‘অসাংবিধানিক’ বলে অভিহিত করেছেন এবং এর বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘সোরোস-অর্থায়নে চলা ডেমোক্র্যাট ফ্রন্ট-গ্রুপগুলো নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ব্যালটে তার সঠিক স্থান দিতে অস্বীকার করছে।’
এছাড়া ট্রাম্প ইতোমধ্যেই কলোরাডো মামলার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে হামলা চালায় ট্রাম্প সমর্থকরা। কংগ্রেসের যৌথ ওই অধিবেশনে সেদিন জো বাইডেনকে আনুষ্ঠানিক ভাবে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তুতি চলছিল।
একপর্যায়ে ক্যাপিটল ভবনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ও মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন ট্রাম্প সমর্থকরা। হামলাকারীদের অনেকেই ছিল সশস্ত্র। ভেতরে ঢুকে সিনেট হলে রীতিমতো তাণ্ডব চালায় তারা।
শুধু তা-ই নয়, তৎকালীন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিসহ বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতার কার্যালয়ও তছনছ করে তারা। হামলা-সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যসহ নিহত হন পাঁচজন।