দুই মাসেরও কম সময়ে ১৪ হাজারেরও বেশি অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক রুসলিন জুসোহ।
১ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৫২৮টি অভিযান পরিচালনা মাধ্যমে ১৪ হাজার ৩৬১ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করা হয়। তবে আটক অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি রয়েছেন তা উল্লেখ করা হয়নি।
মহাপরিচালক রুসলিন জুসোহ বলেন, একই সময়ে অভিবাসন আইনের অধীনে অবৈধ অভিবাসীদের নিয়োগ ও আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে ১৩৯ নিয়োগকর্তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বার্নামা টিভিতে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলছিলেন, এ অভিযান কেবল অবৈধ অভিবাসীদের লক্ষ্যে করা হচ্ছে না, নিয়োগকর্তাদেরও করা হচ্ছে। কিছু নিয়োগকর্তা আছেন যারা বিদেশি কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া এড়াতে চান, তারা লেভি দিতে চান না। এটি ভুল, কারণ দেশে আইন রয়েছে যা অবশ্যই অনুসরণ করা উচিৎ।
১ মার্চ থেকে অভিবাসী প্রত্যাবাসন কর্মসূচি (পিআরএম) শুরু হলেও অভিবাসন বিভাগ অনথিভুক্ত বিদেশিদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন রুসলিন জুসোহ।
প্রত্যাবাসন কর্মসূচি যা ১ মার্চ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাস্তবায়িত হবে, এ কর্মসূচির মাধ্যমে অবৈধ অভিবাসীরা ইমিগ্রেশন বিভাগের নির্ধারিত শর্ত পূরণ করার পরে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এর মধ্যে বৈধ ভ্রমণ নথি এবং একটি ফিরতি টিকিট অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
এ বছর অভিবাসন বিভাগ মালয়েশিয়া জুড়ে ২২০টি ‘হটস্পট’-এ অভিযান পরিচালনা করবে। ২২০টি ‘হটস্পট’-এ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সমন্বিত অপারেশন পরিচালনা করার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিদেশিদের আগমন রোধে অভিবাসন বিভাগ যে ব্যবস্থা নিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বিদেশি শ্রম, পাইকারি বাজার এবং আন্তর্জাতিক ছাত্রদের গ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়োগকারী ব্যবসার পরিদর্শন।
এছাড়া ইমিগ্রেশন বিভাগ দেশের সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ ও পরিদর্শনও কঠোর করেছে। মালয়েশিয়ায় প্রবেশকারী বিদেশি দর্শকদেরও তাদের মূল দেশে ফিরতি টিকিট উপস্থাপন করতে হবে।
১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় সক্রিয় বিদেশি কর্মীদের তথ্য হিসাবে রুসলিন বলেছেন, মালয়েশিয়ায় মোট ২১ লাখ ২৩ হাজার ৪৯ জন বিদেশি কর্মী রয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭ লাখ ৮৬ হাজার ৭৯৫ বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। তারপর ইন্দোনেশিয়া থেকে ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৮৩, নেপাল থেকে ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৪৯৮, মায়ানমার থেকে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৩২৪ এবং ভারত থেকে এসেছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৭০৬ জন।
এ দেশগুলো ছাড়াও কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানসহ অন্যান্য দেশ থেকে বিদেশি কর্মীদের প্রবেশের অনুমতি দেয় মালয়েশিয়া।