রোজার আগেই বাড়ছে ডাল ও মসলার দাম

মত ও পথ ডেস্ক

ফাইল ছবি

কদিন পরই শুরু হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান। রোজার আগেই প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। চাল, মাছ, মাংস এবং এসবের সঙ্গে নতুন করে বেড়েছে ডাল ও মসলার দাম।

মোটাদাগে এখন বাজারে চিনি, ভোজ্যতেল, গরুর মাংস, মসুর ডাল, অ্যাংকর ডাল, খেসারি ডাল, ছোলা ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। স্বস্তির খবর নেই কোনো বাজারেই। রোজায় দাম কমা নিয়েও শঙ্কায় ক্রেতারা।

universel cardiac hospital

শুক্রবার (১ মার্চ) সকালে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মসলার বাজারে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এলাচের দাম। প্রতি কেজি এলাচের দাম বেড়েছে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। মানভেদে প্রতি কেজি এলাচ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকায়। যা এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ এখন প্রতি ১০০ গ্রাম এলাচ কিনতে হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০টাকা দরে।

অন্যদিকে, লবঙ্গের কেজিতে বেড়েছে ২০০ টাকা। এখন ১০০ গ্রাম লবঙ্গের দাম ২২০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও এর দাম ছিল ২০০ টাকা। এই হিসেবে প্রতি কেজিতে লবঙ্গের দাম বেড়েছে ১০০ টাকা। এছাড়া হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, ধনিয়া, জিরা এগুলোর দামও ১০ থেকে ২০ টাকা প্রতি ১০০ গ্রামে বেড়েছে।

বাজারে প্যাকেটজাত মসলা সরবরাহ কোম্পানিগুলোও তাদের মসলার দাম বাড়িয়েছে। হলুদের গুঁড়ার ছোট প্যাকেটের দাম ৫৫ টাকা থেকে ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৬ টাকা। মরিচের গুঁড়ার দাম ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা। গরুর মাংসের মসলা ২০ টাকা থেকে ৫টাকা বেড়ে হয়েছে ২৫ টাকা। মুরগির মাংসের মসলার প্যাকেট ১টাকা থেকে ২টাকা বেড়ে হয়েছে ২০ টাকা।

অন্যদিকে, বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ, যা প্রতি কেজি ১২০ টাকা। এখনো পেঁয়াজের দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি বাজারে। এছাড়াও আদা-রসুনের দাম বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি ২৪০ টাকার নিচে আদা বা রসুন কেনা যাচ্ছে না।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সামনে রমজান, ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত মুনাফার প্রবণতার ফলে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ক্রেতারা বাজারে গিয়ে পণ্যে দাম জেনে হতাশ হচ্ছেন। রামপুরা বাজারে জায়েদ আলী নামের একজন ক্রেতা বলেন, রমজান আসবে বলে তারা আগেভাগেই দাম বাড়িয়ে নিয়েছে, যাতে রমজান মাসের নতুন করে দাম বাড়ানোর প্রয়োজন না হয়।

অন্যদিকে, এক সপ্তাহ আগে খুচরা বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি খেসারির ডালের দাম ছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকা। এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। এবার রমজানের বেশ আগেই ছোলার দাম বেড়েছে। এখন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত প্রতি কেজি।

রামপুরা বাজারে বিক্রেতা তালেব হোসেন বলেন, এবার রোজার অনেক আগেই থেকে ছোলা খেসারি ডালসহ অন্যান্য সব ডালের দাম চড়া। গত দুই তিন মাসের ব্যবধানে হিসাব করলে আগের তুলনায় প্রতি কেজির ডালের দাম ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে।

বাংলাদেশ পাইকারি ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শফি মাহমুদ বলেন, ডালের আমদানি খরচ বাড়ছে। ডলারের দামের কারণে এ অবস্থা। তবে রমজানের প্রয়োজনীয় অধিকাংশ ডাল দেশে আমদানি হয়েছে। রমজানের মধ্যে নতুন করে দাম বাড়ার সম্ভাবনা নাই, কমারও সম্ভাবনা কম।

অন্যান্য ডালের মধ্যে প্রতি কেজি মোটা, মাঝারি ও সরু দানার মসুর ডাল ১০৫ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে প্রতি কেজি অ্যাংকর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। আর মুগ ডালের কেজি পড়ছে ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা। ডালের এ দাম এ যাবত সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন কয়েকজন বিক্রেতা।

অন্যদিকে, আগে ৭০০ টাকা কেজিতে পাওয়া গেলেও পবিত্র শবে বরাতের পর থেকে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকার নিচে কোথাও গরুর মাংস কিনতে পাওয়া যাচ্ছে না।

শেয়ার করুন