রাখাইনের রাজধানী সিত্তের শহর এবং গ্রামাঞ্চল থেকে হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে যাচ্ছেন। সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) যে কোনো সময় সিত্তেতে হামলা চালাতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে সাধারণ মানুষ বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে যাচ্ছেন।
শুক্রবার (১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রাখাইনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নারিনজারা নিউজ।
স্থানীয় এক বাসিন্দা সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, “আরাকান আর্মি সিত্তে দখল করতে পারে এমন খবর শোনার পর মানুষ পালিয়ে যাচ্ছে। এখন তারা স্বাধীন অঞ্চলগুলোতে যাচ্ছেন।”
ইয়াঙ্গুন-সিত্তে মহাসড়কে অবস্থিত আহ মিয়ান্ট কায়ুন মিন চং সেতুটি মাইন দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। মূলত আরাকান আর্মির যোদ্ধারা যেন সিত্তেতে প্রবেশ করতে না পারেন সেটি নিশ্চিতে সেতুটি ধ্বংস করে দিয়েছে তারা। এতে করে সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক বৃদ্ধি পেয়েছে।
“গুরুত্বপূর্ণ ওই সেতুটি উড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে কার্যত এখানকার বাসিন্দাদের আটকে ফেলা হয়েছে। যদি যুদ্ধ শুরু হয় তাহলে যুদ্ধ থেকে কিভাবে পালাবেন এ নিয়ে মানুষ শঙ্কিত। এ কারণে মানুষ এখন পালিয়ে যাচ্ছেন। তারা নিজেরাই সময়টি ব্যবহার করছেন।” যোগ করেন ওই বাসিন্দা।
নারিনজারা নিউজ জানিয়েছে, সাধারণ মানুষের পাশপাশি সেনাবাহিনীর পরিবারের সদস্যরাও সিত্তে ছেড়েছেন।
বর্তমানে সিত্তের মোট বাসিন্দার এক তৃতীয়াংশ সেখানে অবস্থান করছেন। যারা রয়ে গেছেন তাদের মধ্যে কেউ আর্থিকভাবে স্বচ্ছল নন, কেউ বৃদ্ধ আবার কেউ কেউ নিজেদের মালপত্র চুরি নিয়ে চিন্তিত। যারা পালিয়েছেন তাদের বেশিরভাগ নৌকা ব্যবহার করে অন্যত্র সরে গেছেন। সিত্তেতে নদীর এক পাশ থেকে অপর পাশে যেতে এখন জনপ্রতি ৫০ হাজার কিয়েট খরচ করা লাগছে।
তবে জান্তা বাহিনী সাধারণ মানুষকে পালানোর ক্ষেত্রেও বাধা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন অপর এক বাসিন্দা। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, যদি আরাকান আর্মি হামলা চালায় তাহলে যেন বেসামরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সেনারা পালাতে পারেন সেজন্য সাধারণ মানুষকে পালাতে দেওয়া হচ্ছে না।
একজন সামাজিককর্মী পালিয়ে যাওয়া মানুষদের পরামর্শ দিয়েছেন যেন তারা পর্যাপ্ত খাবার ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে প্রস্তুত থাকেন।
সূত্র: নারিনজারা নিউজ