১২ ফেব্রুয়ারি অনেকটা নীরবেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের ‘ব্যাটন’ বদল হয়ে গেল। অধিনায়ক সাকিব অধ্যায়ের ইতি ঘটেছে, বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন তামিম ইকবাল। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এক ধাপ ওপরে নিয়ে যাওয়া সাকিব-তামিম প্রজন্মের বিদায়ের সূচনা হয়েছে সেদিন বিসিবির বোর্ড সভায়। পালাবদলের চিরাচরিত এ নিয়মে তাদের স্থলাভিষিক্ত হতে শুরু করেছে পরবর্তী প্রজন্ম। যার সূচনা হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তকে তিন ফরম্যাটে অধিনায়ক করার মধ্য দিয়ে। আজ সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি২০ ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে শান্ত অধ্যায় শুরু।
অধিনায়কত্ব পাওয়ার তিন সপ্তাহ পর গতকালই প্রথম গণমাধ্যমের সামনে এলেন শান্ত। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলন হলেও বেশির ভাগ প্রশ্ন ছিল তিন ফরম্যাটে তাঁর ভাবনা ও পরিকল্পনা নিয়ে। সেখানে ২৫ বছর বয়সী বাঁহাতি এ টপঅর্ডার জানিয়েছেন, বেশি গুরুত্ব দিতে চান টেস্ট ক্রিকেটে। এর আগে অন্তর্বর্তী অধিনায়ক হিসেবে তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।
তবে পাকাপাকিভাবে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার অনুভূতিটা তাঁর জন্য ব্যাপক গর্বের, ‘অবশ্যই আনন্দের। আমার জন্য, পরিবারের জন্য গর্বের ব্যাপার। প্রত্যেক ক্রিকেটারের স্বপ্ন থাকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা। ওই সুযোগটা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড করে দিয়েছে। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেওয়াটা যে বেশ চ্যালেঞ্জিং, সেটাও ভালো মতো জানেন শান্ত। তবে এই চ্যালেঞ্জের মধ্যেও ইতিবাচকতা খুঁজে পাচ্ছেন তিনি, ‘আমার মনে হয়, কাজটা আমার জন্য এখন আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং। তবে পরিকল্পনা করা একটু সহজ হবে। প্রত্যেক খেলোয়াড় সম্পর্কে জানতে হবে। যদিও আমরা সবাই খেলার মধ্যেই থাকি, সবার সঙ্গে দেখা হয়, কথা হয়। আমার মনে হয় পরিকল্পনা করার দিক থেকে একটু হলেও সুবিধা হবে। তিন ফরম্যাটেই দায়িত্বে আছি। আশা করি সামনে ভালো কিছুই হবে।’
শান্তর পরিকল্পনায় টেস্ট ক্রিকেটে উন্নতির বিষয়টি সর্বাগ্রে, ‘আমার কাছে মনে হয় না টেস্ট ক্রিকেটে আমরা খুব বেশি উন্নতি করেছি। আগে যে অবস্থায় ছিলাম, তার চেয়ে ভালো খেলা শুরু করেছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে চাইব, ঘরের মাঠে আমরা যে ম্যাচগুলো খেলব তার বেশির ভাগ যেন জিততে পারি।’
টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে সবার ভাবনার পরিবর্তনও চান তিনি, ‘টেস্ট খেলার যে গুরুত্ব, সেটা যেন সবার মাঝে ভালোভাবে গড়ে ওঠে। আমরা যখন দেশের বাইরে যাব, বাইরের দলগুলোর সঙ্গে যেন লড়াই করতে পারি।’
ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে একটা বড় ট্রফি এনে দেওয়ার স্বপ্নও দেখেন নতুন অধিনায়ক, ‘ওয়ানডেতে তো আমরা ভালো করছি। কিন্তু দল হিসেবে আমরা বড় কোনো টুর্নামেন্ট জিততে পারিনি বা ট্রফি পাইনি। ওই পরিকল্পনা নিয়ে এগোব, যেন ভালো ক্রিকেট খেলে দেশকে ট্রফি এনে দিতে পারি।’
টি২০ ফরম্যাটেও উন্নতি চান নাজমুল, ‘টি২০-তে আমাদের গত বছরটা বেশ ভালো কেটেছে। আমার মনে হয়, এ ক্ষেত্রে আগের থেকে অনেক উন্নতি হয়েছে। আরও কিছু জায়গায় উন্নতি করলে দেখা যাবে, আমরা যে কোনো দলের বিপক্ষে যে কোনো কন্ডিশনে ভালো করছি। যখন খেলাগুলো শুরু হবে, তখন পরিকল্পনা আরও পরিষ্কার হবে।’ সে সঙ্গে স্কোয়াডের ১৫ জনের সঙ্গে জাতীয় দলের আশপাশে থাকা ৩০-৩৫ জন খেলোয়াড়েরও উন্নতি চান নতুন নেতা।