স্বাগত মাহে রমজান

সম্পাদকীয়

রমজানে ইবাদত
প্রতীকী ছবি

স্বাগত মাহে রমজান। বছর ঘুরে আবারো আমাদের মাঝে শুভাগমন করেছে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। মাহে রমজানে সাওম বা রোজা পালন করা প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিম নর-নারীর ওপর ফরজ। সাওম শুধু অবশ্য পালনীয় ইবাদতই নয়, বরং আত্মিক উন্নতি ও নৈতিক উৎকর্ষ সাধনেও সাওমের ভূমিকা অনন্য। কেননা সাওমের উদ্দেশ্যই হলো তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে আত্মিক পরিশুদ্ধি লাভ করা।

রমজান আত্মশুদ্ধির পাশাপাশি আত্মসংযমেরও মাস হলেও দুঃখজনক হলো, দেশের একশ্রেণির অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ীর মধ্যে আত্মসংযম, সততার লেশমাত্র দেখা যায় না রমজানে। এ মাস সামনে রেখে নানা কৌশলে অনৈতিকভাবে তারা সিন্ডিকেট করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে থাকেন। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অবশ্য আর্ন্তজাতিক বাজারের পরিস্থিতির বাইরে আমাদের দেশের বাজারকে রাখা সম্ভব নয়। যেমন, বাজারে ভোজ্যতেল, চিনি, গম, মসুর ডাল, ছোলার সরবরাহ আমদানিনির্ভর। এসব পণ্যের দাম বিশ্ববাজারে বেড়েছে। আবার মার্কিন ডলারের দাম বাড়ায় আমদানির খরচ বেড়েছে। ফলে পণ্যগুলোর দাম বেশি। এটাও সত্য, আর্ন্তজাতিক বাজারে পণ্যের দাম বাড়লে কোনো দেশে সেই পণ্যের দামটা যেন ব্যবসায়ীরা খেয়ালখুশিমতো নির্ধারণ করতে না পারেন, সেজন্য দরকার সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা। প্রসঙ্গত, বাজার ব্যবস্থাপনা যথাযথ না হওয়ায় এবারও বিশ্ববাজারের ওপর আমদানি নির্ভরতা না থাকা পণ্যের দামও চড়া। অর্থাৎ, দেশে উৎপাদিত পণ্যের দামও অস্বাভাবিক বেড়েছে। যেমন, দেশীয় পণ্য শসা, লেবু, বেগুন, পেঁয়াজ, ব্রয়লার মুরগির দাম। যদিও বিশ্ববাজারের দোহাই দিয়ে অতি লোভী ব্যবসায়ীদের নিত্যপণ্যের দাম যাচ্ছেতাইভাবে নির্ধারণের কোনো যুুক্তি নেই।

universel cardiac hospital

পর্যাপ্ত মজুত থাকা সত্ত্বেও রমজান উপলক্ষে সাহরি ও ইফতারে ব্যবহৃত পণ্যের দাম বৃদ্ধি দুর্ভাগ্যজনক। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। রোজাদারদের স্বাচ্ছন্দ্য বাড়াতে দায়িত্বশীলরা সক্রিয় হলে তারা যেমন রোজাদারসহ ভোক্তাদের আস্থা অর্জন করবেন তেমনি আল্লাহর রহমতও নিশ্চিত হবে।

ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী ত্যাগ, কৃচ্ছ্রসাধনের মাধ্যমে ভ্রাতৃত্ব ও শান্তির আদর্শকে সমুন্নত রাখতে দেশের সব মুসলমান রমজানে সচেষ্ট হবেন-এমনটিই প্রত্যাশা। তাছাড়া, নৈতিক অবক্ষয়ই বর্তমান বিশ্বের প্রধানতম সমস্যা। আজ মুসলিম মিল্লাতের উচিত চারিত্রিক অধঃপতন থেকে নিজেদের রক্ষা করা এবং নেতিয়ে পড়া চেতনাকে জাগ্রত করা। আর নৈতিকতার উৎকর্ষ সাধনই হোক এবারের মাহে রমজানের অঙ্গীকার। মহান আল্লাহপাকের কাছে এ তাওফিক কামনা করছি।

শেয়ার করুন